ফ্রান্সে শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা

ফ্রান্সে এক শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তি তার ছাত্রদের  নবী মোহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত কার্টুন দেখিয়েছিলেন। এ  ঘটনাকে 'ইসলামি সন্ত্রাসী হামলা' বলে বর্ণনা করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বিবিসি বলছে, শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে একটি স্কুলের সামনে হামলার ঘটনা ঘটে। রাজধানী প্যারিসের উত্তর-পশ্চিমের শহরতলীতে শুক্রবারের এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয় হামলাকারী। ঘটনায় তদন্ত করছে সন্ত্রাস বিরোধী পুলিশ বিভাগ।

1

কনফা-সাঁত-ওনোরিন এলাকায় বড় আকারের একটি ছুরি হাতে ওই শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে। এরপর আক্রমণকারী পালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে তারা দ্রত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ সদস্যরা এরাগনি এলাকায় হামলাকারীকে আটকাতে সক্ষম হয়। সেসময় পুলিশ চিৎকার করে হামলাকারীকে আত্মসমর্পণ করতে বলে, কিন্তু হামলাকারী উল্টো পুলিশকে হুমকি দেয়। এ পর্যায়ে পুলিশ হামলাকারীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সে মারা যায়।

ফ্রান্সের পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে করা এক টুইটে স্থানীয়দের ঐ অঞ্চল এড়িয়ে চলাচল করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন,  ওই শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছে কারণ তিনি 'মত প্রকাশের স্বাধীনতা'র শিক্ষা দিচ্ছিলেন। নিহত ব্যক্তির নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি। হামলাকারী সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য জানায়নি পুলিশ।

২০১৫ সালে শার্লি হেবদোর ঐ অফিসে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়, যেই ঘটনার বিচারকাজ এখনো চলছে। তিন সপ্তাহ আগে ফরাসী ব্যাঙ্গ রসাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি হেবদোর পুরনো অফিসের সামনে দুই ব্যক্তির ওপর হামলা চালিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে।

লে মঁন্ড পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ব্যক্তি ইতিহাস ও ভূগোলের শিক্ষক ছিলেন। শার্লি হেবদো ম্যাগাজিন ইসলামের নবীকে নিয়ে ছাপা হওয়া যেসব কার্টুন মুসলিমদের উষ্মার কারণ হয়েছিল, সেই ধারার কার্টুন চিত্র প্রকাশের সাথে বাক স্বাধীনতার সম্পৃক্ততা নিয়ে ক্লাসে ছাত্রদের সাথে আলোচনা করেছিলেন তিনি।

ফরাসি মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, শার্লি হেবদো ইসলামের নবীর যেসব কার্টুন ছেপেছিল, সেগুলোর একটি বা একাধিক কার্টুন দেখিয়ে ছাত্রদের সাথে আলোচনা করার জন্য এ মাসের শুরুর দিকে কয়েকজন মুসলিম অভিভাবক স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও করেছিলেন।