দর্শকশূন্যই থাকবে পশ্চিমবঙ্গের দুর্গা মণ্ডপ: কলকাতা হাইকোর্ট

পশ্চিমবঙ্গে দুর্গা পূজার মণ্ডপ দর্শকশূন্য রাখার রায় বহাল রেখেছে কলকাতা হাইকোর্ট। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, পূজা আয়োজকদের পক্ষ থেকে করা রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করা হলেও পূজা প্যান্ডেলে প্রবেশাধিকার সংক্রান্ত পূর্ববর্তী আদেশে খানিক পরিবর্তন এনেছেন আদালত।

1

বুধবার (২১ অক্টোবর) দেওয়া নতুন আদেশে বড় মাপের মণ্ডপের ক্ষেত্রে একসঙ্গে ৪৫ জনকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে সোমবার দেওয়া রায়ে বলা হয়েছিল, মণ্ডপে একসঙ্গে ১৫-২০ জনের বেশি প্রবেশ করতে পারবে না।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পুজায় স্বাস্থ্যবিধির লঙ্ঘন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল চিকিৎসকমহল। এরপরই রাজ্যে ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়। শুনানি শেষে ১৯ অক্টোবর দেওয়া রায়ে বলা হয়, এবার পূজামণ্ডপ থাকবে দর্শকশূন্য। নো এন্ট্রি বাফার জোন লেখা থাকবে মন্ডপের সামনে। ছোট মন্ডপের ক্ষেত্রে ৫ মিটার, বড় মন্ডপের ক্ষেত্রে ১০ মিটার আগে থাকবে ব্যারিকেড। একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। তাতে কমিটির যাদের নাম থাকবে, তারা ছাড়া বাইরের কেউ আসবেন না। তাদের নাম তালিকা আগে থেকে দিতে হবে। রাজ্যের যে ৩৪ হাজার পুজো কমিটি অনুদান নিয়েছে এই নিয়ম সকলের জন্য প্রযোজ্য হবে।

এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে পূজা কমিটিগুলি। বুধবার শুনানি শুরু হলে কলকাতার দুর্গাপুজো কমিটিগুলির যৌথ ফোরামের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তারা কোনও ছাড় চাইছেন না। শুধু মণ্ডপগুলোতে যেন স্থানীয়দের সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত প্রবেশের অধিকার দেওয়া হয়। যাতে তাঁরা পুজো দিতে পারেন। তাদের প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার জন্য আলাদা পথ থাকবে। কিন্তু আদালত সরাসরি সেই আবেদন মেনে নেয়নি। বুধবারও কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে পূজা দর্শকশূন্যই থাকছে। তবে এদিনের রায়ে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে শীর্ষ আদালত। মণ্ডপে ঢোকার ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের বেঞ্চ বলেছে, "বড় পুজোয় প্রবেশের জন্য ৬০ জনের তালিকা বানাতে হবে। ৬০ জনের তালিকা হলেও একসঙ্গে থাকতে পারবেন সর্বোচ্চ ৪৫ জন। ৩০০ বর্গ মিটারের কম মাপের মণ্ডপের জন্য ১৫ জনের তালিকা দেওয়া যাবে। তবে ১৫ জনের তালিকা হলেও একসঙ্গে থাকতে পারবেন ১০ জন। উদ্যোক্তা ও স্থানীয়দের নামের তালিকা রোজ আপডেট করা যাবে।"

বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী, করোনা বিধি মেনে নো এন্ট্রি জোনে মণ্ডপের বাইরে থাকতে পারবেন ঢাকিরা। সিঁদুর খেলারও অনুমতি দেয়নি আদালত।