কৃষকের আত্মহত্যা প্রচেষ্টার আগুনে উত্তপ্ত ভারত

পাঞ্জাবের কৃষক সংগঠনগুলির ডাকা 'দিল্লি চলো' অভিযানে দলে দলে সামিল হচ্ছেন কৃষকরা। কেবল পাঞ্জাব বা হরিয়ানার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই এই আন্দোলন; অন্যান্য রাজ্যের কৃষকরাও ধীরে ধীরে এতে শরিক হচ্ছেন। জোরদার হচ্ছে বিজেপি সরকারের নতুন কৃষি আইন বিরোধী জনমত। সেইসঙ্গে বিস্তৃত হচ্ছে আন্দোলনের পরিসর। পাঞ্জাবের কৃষকদের ধারাবাহিকতায় এতে যুক্ত হয়েছে অন্যান্য রাজ্যের কৃষকরাও। উড়িষ্যায় ৩ কৃষকের আত্মহত্যার চেষ্টা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।  
1সেপ্টেম্বরে ভারতে নতুন কৃষি আইন পাস হওয়ার পর থেকেই কৃষকরা বিক্ষুব্ধ। গত তিন দিন ধরে পাঞ্জাব ছাড়াও হরিয়ানা, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশের হাজার হাজার কৃষক রাজধানী দিল্লির দিকে অগ্রসর হয়ে সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছেছেন। তাদের ঠেকাতে মরিয়া বিজেপি সরকার। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কয়েক দফায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও হয়েছে। জোরালো দাবির মুখে শুক্রবার এক পর্যায়ে কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। বুরারি এলকার নিরঙ্কারী মাঠে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির অনুমতি মেলে। পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নিরঙ্কারী মাঠ পরিদর্শন করেন কৃষক প্রতিনিধিরা। ওই মাঠে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ থেকে কৃষকরা ট্রাক্টরে চেপে দিল্লি অভিমুখে রওনা দিয়েছেন এই আন্দোলনে শরিক হতে। উত্তরপ্রদেশ হয়েই তাঁরা দিল্লিতে ঢুকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এরইমধ্যে দিল্লি ও এর আশপাশের রাজ্যগুলোর হাজার হাজার কৃষক নয়া দিল্লির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। ভারতের অমৃতসর থেকে আসা ৭৫ বছর বয়সী কৃষক হরভজন সিং ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, 'সরকার আমাদের ওপর অত্যাচার করছে। আমরা চাই সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডেকে যাতে এই বিতর্কিত নতুন আইন প্রত্যাহার করা হয়।'

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, ওই মাঠে তারা ততক্ষণ অবস্থান করবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের কথা সরকার শোনে। 

শুক্রবার উড়িষ্যায় তিন কৃষক আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। উড়িষ্যা বিধানসভার সামনেই কটকের অথাগড়় ব্লকের ওই তিন চাষি গায়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেন। এখন শীতকালীন অধিবেশন চলছে। সেখানে কঠোর নিরাপত্তা রয়েছে। কিছু একটা ঘটতে চলেছে আন্দাজ করে নিরাপত্তারক্ষীরা দৌড়ে আসেন। কটকের তিন কৃষকের আত্মহত্যার প্রচেষ্টা রুখে দেওয়া হয়। পরে তাদেরকে আটক করা হয়।তাদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদেই তাঁরা বিধানসভা ভবনের সামনে এসে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অথাগড় জেলা সমবায় ব্যাংকে ঋণের অনিয়ম নিয়েও তারা অসন্তোষের কথা পুলিশকে জানিয়েছেন।