তাইওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

তাইওয়ানের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের যোগাযোগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এ ঘোষণা দিয়েছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

মূলত চীনকে সন্তুষ্ট রাখতেই কয়েক দশক আগে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের কর্মকর্তাদের মধ্যকার সরাসরি যোগাযোগে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। তবে মেয়াদের শেষ সময়ে এসে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, বাস্তবে ওই নিষেধাজ্ঞা আর কার্যকর নেই। তাই আনুষ্ঠানিকভাবেই এটি প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্য সঙ্গী তাইওয়ানে প্রাণবন্ত গণতন্ত্র রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মাইক পম্পেও। এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে চীন। একইসঙ্গে এক চীন নীতির প্রতি সম্মান দেখাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেলি ক্র্যাফ্ট আগামী সপ্তাহে তাইওয়ান সফরে যাচ্ছেন। তার দফতর জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জোরালো সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করতেই তার এ সফর।

ক্র্যাফ্ট-এর এই সফরসূচির প্রতিক্রিয়ায় নিজ দেশের ক্ষোভের কথা জানিয়েছে জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা মিশন। মিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা আগুন নিয়ে খেলা করছে তারা নিজেরাই এই আগুনে পুড়ে মরবে। এই ভুল পদক্ষেপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে চড়া মূল্য দিতে হবে। অন্যথায় ওয়াশিংটন-বেইজিং সম্পর্কের ওপর এটি মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

চীন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত ১৯২৭ সালে। ওই সময়ে চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধ। ১৯৪৯ সালে মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা জাতীয়তাবাদী সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। জাতীয়তাবাদী নেতারা পালিয়ে তাইওয়ান যান। এখনও তারাই তাইওয়ান নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাথমিকভাবে ওই সময় যুদ্ধ বন্ধ হয়ে পড়লেও উভয় দেশই নিজেদের চীনের দাবিদার হিসেবে উত্থাপন শুরু করে। তাইওয়ানভিত্তিক সরকার দাবি করে, চীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের দ্বারা অবৈধভাবে দখল হয়েছে। আর বেইজিংভিত্তিক চীন সরকার তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাকামী প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে। সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স।