কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভ্যাকসিন রফতানির সিদ্ধান্ত: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভারত করোনা ভ্যাকসিন রফতানির বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবে। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
স্বাস্থ্যসেবা ও সম্মুখ কর্মীদের অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে টিকাদান কর্মসূচি শুরুর কথা রয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।
রয়টার্সের সঙ্গে আলাপকালে এস জয়শঙ্কর বলেন, জনগণের কাছে ভ্যাকসিন সরবরাহের বিষয়ে বিদেশি সরকারগুলোর উদ্বেগ দিল্লি বুঝতে পারছে। তবে ভারতকে তার নিজ দেশের মানুষের চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। আমাদের নীতি হচ্ছে অবশ্যই আমরা ভারতে রোলআউট শুরু করবো। আমাদের নিজস্ব চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার চালান দ্রুত পাঠাতে গত সপ্তাহেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো। অন্যদিকে ২৫ জানুয়ারি টিকা পাওয়ার আশাবাদের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি দেশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আমরা তাদের বলছি, দেখুন এটি প্রথম মাস। ভ্যাকসিন এখন উৎপাদনে যাচ্ছে। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টিকা স্টক করার কাজ চলছে।
ভারতে আরও চারটি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে বলেও জানান এস জয়শঙ্কর। এরমধ্যে রাশিয়ার স্পুটনিক ফাইভও রয়েছে।
এস জয়শঙ্কর বলেন, পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশটিতে ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার মারাত্মক আশঙ্কা ছিল। কিন্তু ভারত ভালোভাবেই মহামারি নিয়ন্ত্রণে সমর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা নিজেরাই বিস্মিত হয়েছি। সম্ভবত পুরো দুনিয়া আমাদের মতো অবাক হয়েছে। ওই সময়ের পরিস্থিতির দিকে তাকালেই এটি স্পষ্ট হবে।
ভারতের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩০ কোটি মানুষকে টিকা প্রয়োগ করতে ৬০ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন পড়বে। আর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে পাঁচ কোটি ডোজ টিকা ভারতে সরবরাহের জন্য মজুদ করে ফেলেছে।
আশা করা হচ্ছে ভারতের চাহিদার ৯০ শতাংশই পূরণ হবে অক্সফোর্ডের টিকার মাধ্যমে। ভারতকে প্রতি ডোজ ২০০ রুপি দামে সরবরাহ করছে সেরাম ইনস্টিটিউট। ভারতের বিপুল চাহিদার কারণে দেশটি অপেক্ষাকৃত কম দামে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেরাম। তবে এ টিকার প্রতি ডোজ চার ডলার মূল্যে বাংলাদেশকে সরবরাহ করবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট (এসআইআই)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর দাম পড়বে প্রায় ৩৪০ টাকা। সেরামের কাছে ভারত যে মূল্যে এই টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশের জন্য সেই মূল্য প্রায় দেড়গুণ (৪৭ শতাংশ) বেশি।