নিজ দল থেকে বহিষ্কৃত নেপালের প্রধানমন্ত্রী

নিজ দল থেকে বহিষ্কৃত হলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার জেরে উদ্ভূত রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই রবিবার তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি। দলের মুখপাত্র নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠা সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠা জানান, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ওলির সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। এর আগে পার্লামেন্ট ভেঙে নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজপথে নামে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (এনসিপি)-র ওলি বিরোধী অংশ। দল থেকে তাকে বহিষ্কারের দাবিতেও আওয়াজ তোলে তারা। শেষ পর্যন্ত রবিবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়।

এনসিপি-র ওলি বিরোধী অংশের নেতা মাধব কুমার নেপাল জানিয়েছেন, ‘আমরা এনসিপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে ওলিকে বহিষ্কার করেছি। এবার তার বিরুদ্ধে নীতিগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেননা তিনি আর কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য থাকার যোগ্য নন। নিজের সিদ্ধান্তের জন্য তার কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত তিনি কোনও ব্যাখ্যা পেশ করেননি।’

ভুল স্বীকার করে নিজের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের চেষ্টা করলেও ওলির সঙ্গে মিটমাটের কোনও সম্ভাবনা নেই বলে সাফ জানিয়েছেন মাধব। তিনি বলেন, ‘কেউ যেন মনে না করেন যে, ওলির সামনে এনসিপি মাথা নত করবে। এমন কখনও হবে না। কারণ আমরা মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে রাজনীতি করি।’

প্রসঙ্গত, তিন বছর আগে নির্বাচনে জয়লাভ করে নেপালে এনসিপি ও প্রাক্তন মাওবাদী বিপ্লবীদের জোট ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হন ওলি। পূর্বশর্ত অনুযায়ী শাসনকালের পাঁচ বছরের মেয়াদ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছিলেন ওলি এবং বিপ্লবী নেতা পুষ্প কুমার দহল প্রচণ্ড। কিন্তু সেই শর্ত উপেক্ষা করে নির্দিষ্ট সময়ে প্রচণ্ডের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেন ওলি। এই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চরম মতবিরোধ দেখা দেয়।

ওলি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও এনেছে সাবেক মাওবাদী বিপ্লবীরা। এছাড়া করোনা মহামারী মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতা নিয়েও সরব হয়েছে বিরোধীরা। একইসঙ্গে ভারতের সখ্যতা উপেক্ষা করে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি নিয়েও রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে পড়তে হয়েছে তাকে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।