নাসার ক্যামেরায় অ্যামাজনের ‘সোনার নদী’

পেরুর অ্যামাজন বনের গহীনে ‘সোনার নদী’ সদৃশ একটি ছবি ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা! মহাকাশ থেকে তোলা ওই ছবিতে দেখা গেছে, কথিত ওই সোনার নদী বনের গহীনে দ্যুতি ছড়াচ্ছে। নাসার ধারণা, দৃশ্যটি আসলে পাহাড়ের বুকে খোঁড়া অবৈধ সোনার খনির। অনুমোদনহীন স্বর্ণসন্ধানীরা এর নেপথ্যে রয়েছেন বলে মনে করছে তারা।    

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে নাসার একজন নভোচারী গত ডিসেম্বরে ওই ছবিগুলো ধারণ করেন। এমনিতে স্যাটেলাইটের ক্যামেরায় এমন খনি-জাতীয় কিছুর ছবি ধরা পড়ে না, তবে হঠাৎ করে রোদ প্রতিফলিত হওয়ায় ছবিতে তা ফুটে উঠেছে উজ্জ্বল সোনার নদীর রূপ নিয়ে।

বিবিসি বলছে, পেরুর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অ্যামাজন বনাঞ্চলে সোনার জন্য কী ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চলছে; নাসার ওই ছবিতে তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। উল্লেখ্য, লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় সোনা রপ্তানিকারক দেশ পেরু। আর মাদ্রে দ্য দিয়স অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক সোনার খনি রয়েছে, যেগুলো সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

স্বর্ণসন্ধানীদের উৎপাতে অ্যামাজনের ওই অঞ্চলে বন উজার হয়ে যাচ্ছে, খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জীব বৈচিত্র্য। আকরিক থেকে সোনা ওঠাতে টনকে টন পারদ ব্যবহার করা হচ্ছে, যার বিষক্রিয়ার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আবার পারদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নদী ও পরিবেশে মিশছে। সোনার সন্ধানে পরিচালিত খননের কারণে হুমকির মুখে পড়ছে পাহাড়ি নদী। পাহাড়ের বুকে পুরনো নদী খাতে যেখানে বিভিন্ন খনিজ উপাদান জমা হয়, সেখানে পানি ঢুকে তৈরি হয়েছে শত শত ডোবা।

২০১৯ সালের জানুয়ারির এক গবেষণার বরাত দিয়ে বিবিসি লিখেছে, স্বর্ণ সন্ধানীদের এই তৎপরতার কারণে তার আগের বছর পেরুর আমাজনে ২২ হাজার ৯৩০ একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে।