কর্মীর কথা শুনে কাঁদলেন কোটিপতি ব্যবসায়ী

মাত্র ২০ পাউন্ড দিয়ে শুরু করেছিলেন সেলিম হুসাইন। এর ৩০ বছর পর বর্তমানে তার ব্যবসার বার্ষিক টার্নওভার ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ উদ্যোক্তা ইউরোপজুড়ে ভারতীয় খাবারের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউরো ফুডসের প্রতিষ্ঠাতা। তার দাবি, যুক্তরাজ্যে প্রায় সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তার খাদ্যসামগ্রী খেয়ে থাকে।

সেলিম হুসাইনের প্রতিষ্ঠান এখন প্রতিদিন ৫০০ টন খাদ্য স্থানান্তর করে। কিন্তু বাংলাদেশে পরিবেশে তার বেড়ে উঠাটা ছিল নিদারুণ কষ্টের। কখনও কখনও তার ঘরে ভাত ছাড়া আর কিছুই থাকতো না। ১১ বছর বয়সে অন্য একটি পরিবারের সঙ্গে তাকে যুক্তরাজ্যে বসবাসের জন্য পাঠানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল, সেখান থেকে উপার্জন করে তিনি যেন দেশে টাকা পাঠাতে পারেন। কাজে যোগ দেওয়ার পর মা-বাবার কাছে পাঠানোর জন্য যাবতীয় উপার্জন সঞ্চয় করে রাখতেন তিনি।

এক সময় কার্ডিফের ভারতীয় রেস্তোরাঁয় ওয়েটার হিসেবে কাজ করা সেলিম হুসাইন এখন ইউরো ফুডসের মতো একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন, তিনটি মহাদেশজুড়ে যাদের ব্যবসা রয়েছে। সম্প্রতি আইটিভির আন্ডারকভার বিগ বস-এর অংশ হিসেবে ছদ্মবেশে নিজের ওয়েলশের কারখানায় যান তিনি। একটি সম্ভাব্য সম্প্রসারণ পরিকল্পনার আগে তার ব্যবসা কিভাবে কাজ করে সেটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়ে সেলিম হুসাইন তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কঠিন বাস্তবতা অনুধাবন করেন, যাদের কোম্পানির কঠোর টার্গেট পূরণ করতে হয়।

একজন কর্মী জানান, প্রতিষ্ঠান তাদের মূল্যায়নের বদলে বরং প্রায়ই উপেক্ষা করে। এই কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন সেলিম। স্যান্ডারল্যান্ডের বিতরণ কেন্দ্রে অবশ্য একটি ভিন্ন ঘটনা ঘটে। সেখানে স্টাফ টার্নওভার কম এবং সন্তুষ্টির হার তার অফিসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ওই সেন্টারের অপারেশন ম্যানেজার অ্যালানকে ২০ বছর ধরে চেনেন সেলিম। ফলে নিজে না গিয়ে সেখানে কন্যা আনিসাকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেখানে গিয়ে আনিসা দেখতে পান অ্যালান একজন যত্নবান বস যিনি তার কর্মীদের নিয়ে চমৎকার একটি টিম তৈরি করেছেন। এক পর্যায়ে আনিসা তার পরিচয় দেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে নামের একজনকে পদোন্নতি দেন।