করোনার গেম চেঞ্জার হবে 'মলনুপিরাভির'

কোভিডের চিকিৎসায় আশা দেখাচ্ছে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিভাইরাল ক্যাপসুল 'মলনুপিরাভির'। এটি সংক্রমিত রোগীর মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি অর্ধেক কমিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে এটির জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) কাছে আবেদন করেছে এর উৎপাদক সংস্থা মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি মার্ক। তবে অনুমোদন পাওয়ার আগেই ক্যাপসুলটি সংগ্রহে মরিয়া প্রচেষ্টা শুরু করে দিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। আর এমন অসম প্রতিযোগিতার ফলে গরিব দেশগুলোর এই ক্যাপসুলটি না পাওয়ার আশঙ্কা আরও জোরদার হয়েছে।

এশিয়া-প্রশান্ত সাগরীয় অঞ্চলের অনেক দেশকেই যথাসময়ে কোভিডের টিকা নিশ্চিত করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে। তবে এই দফায় আর সেই ভুল করতে চায় না তারা। জানা গেছে, বিভিন্ন দেশ অ্যান্টিভাইরাল এই ক্যাপসুল আগে থেকেই অর্ডার করতে শুরু করেছে।

গেম চেঞ্জার

মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি মার্কের এই ক্যাপসুলকে মহামারি মোকাবিলায় গেম চেঞ্জার হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। বিশেষ করে যারা টিকা নিতে অক্ষম তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার ব্যবস্থা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এরইমধ্যে ক্যাপসুলটি সংগ্রহে আলোচনা বা এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে বলে জানা গেছে। এরমধ্যে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্তত আটটি দেশ রয়েছে বলে জানা গেছে। ওষুধ বিশ্লেষক সংস্থা এয়ারফিনিটি জানিয়েছে, এই তালিকায় নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশ রয়েছে, যারা টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে বেশ বিলম্ব করেছিল।

ভ্যাকসিনের বিকল্প

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওই ওষুধ আশাপ্রদ ফল দেবে; এমন প্রত্যাশা থেকে লোকজন ভ্যাকসিনের বিকল্প হিসেবে এটিকে বেছে নিতে পারেন। তবে এখন পর্যন্ত কোভিড মোকাবিলায় টিকাদানকেই সবচেয়ে ভালো অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর বিভিন্ন দেশ যেভাবে আগেভাগেই এটি মজুতের প্রতিযোগিতায় নেমেছে তাতে বিপাকে পড়বে গরিব দেশগুলো। কেননা, ভ্যাকসিনের মতো এই ক্যাপসুলও ধনী দেশগুলো মজুত করতে শুরু করলে স্বভাবতই এটি সংগ্রহের লড়াইয়ে ছিটকে পড়বে দরিদ্র দেশগুলো।

নন-প্রফিট ড্রাগস ফর নেগলেক্টেড জিজিজ ইনিশিয়েটিভের উত্তর আমেরিকার নির্বাহী পরিচালক র‍্যাচেল কোহেন। তিনি বলেন, 'মলনুপিরাভিরের সত্যিই গেম কিছুটা চেঞ্জ করে দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই সম্ভাবনা এই খেলাকে একটু হলেও বদলে দেবে। তবে আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে যে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে আগে আমরা যে ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম, কোনোভাবেই যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।'‌

মলনুপিরাভির মূলত একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, যা কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসা করে, রোগীর পক্ষে হাসপাতালে ভর্তি এড়ানো সম্ভব হয়। একজন রোগীর যখন কোভিড-১৯ ধরা পড়বে তখন মলনুপিরাভিরের কোর্স শুরু হয়ে যাবে। ২০০ মিলিগ্রামের চারটি ক্যাপসুল দিনে দু'‌বার করে পাঁচ দিন খেতে হবে, মোট ৪০টি ক্যাপসুল। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া, সিএনএন।