২০৩০ সাল নাগাদ বন উজাড় বন্ধের অঙ্গীকার বিশ্বনেতাদের

২০৩০ সাল নাগাদ বন উজাড় বন্ধের অঙ্গীকার করেছেন গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্বনেতারা। ১০০টিরও বেশি দেশের নেতারা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে এটিই প্রথম বড় ধরনের কোনও সমঝোতা। এমনকি আমাজন বনের একটি বড় অংশ কেটে ফেলেছে যেই ব্রাজিল তারাও এ বিষয়ে একমত হয়েছে।

জলবায়ু সম্মেলনের আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, পৃথিবীর ‘ফুসফুস’ যে বনভূমি, সেটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় এই চুক্তি হবে একটি মাইলফলক।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে ধরিত্রীকে বাঁচাতে বন উজাড় বন্ধের পাশাপাশি নতুন করে বন সৃজনের ব্যাপারেও একমত হয়েছেন গ্লাসগোতে সমবেত বিভিন্ন দেশের নেতারা। বনভূমি রক্ষায় এক হাজার ৯২০ কোটি ডলারের তহবিল যোগানোর ব্যপারেও সম্মত হয়েছেন তারা। এই তহবিলের একটি অংশ ব্যয় হবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত জমি পুনরুদ্ধার, দাবানল নিয়ন্ত্রণ এবং আদিবাসী সম্প্রদায়কে সহযোগিতার মতো খাতগুলোতে।

এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। তবে একইসঙ্গে তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বন উজাড় নিয়ে ২০১৪ সালের চুক্তি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। ফলে শুধু সম্মত হওয়াই নয়; বরং এর যথাযথ বাস্তবায়নে মনোযোগী হতে হবে।

গাছপালা যেহেতু কার্বন নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করে সে কারণে বনভূমি ধ্বংস করে ফেলা হলে জলবায়ু পরিবর্তনে এর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

সোমবার গ্লাসগোর সম্মেলন থেকে জারি করা যৌথ বিবৃতিতে সমর্থন দিয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, কানাডা, চীন, ইন্দোনেশিয়া ও ডিআর কঙ্গোর মতো দেশগুলো। বন উজাড় বন্ধের আনুষ্ঠানিক অঙ্গীকারে স্বাক্ষরের কথা জানিয়েছে তারা। বিশ্বের মোট বনভূমির ৮৫ শতাংশই এই দেশগুলোতে। অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলে বিশ্বের সামগ্রিক বনাঞ্চলের একটা বড় অংশ রক্ষা করা সম্ভব।

এই দেশগুলোর পাশাপাশি ৩০টিরও বেশি বহুজাতিক সংস্থা বনবিনাশের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ বন্ধের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।

বনবিনাশ বন্ধে রাজনৈতিক সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জলবায়ু ও বনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সিমন লিউস। তবে তিনি বলেছেন, মাংসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোতে। এর একটি বড় অংশের যোগান আসে দক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় বনাঞ্চল থেকে। সেখানে গবাদিপশু পালনের জন্য বন পুড়িয়ে জমি খালি করা হয়। মাংসের এই চাহিদা কিভাবে পূরণ করা হবে নতুন এই সমঝোতায় তার কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি।