মাদার তেরেসার সংস্থাই অনুরোধ পাঠিয়েছে: ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ প্রসঙ্গে ভারত সরকার

মাদার তেরেসা প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা মিশনারিজ অব চ্যারিটিজের পরিচালিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়নি বলে জানিয়েছে ভারত সরকার। সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে কলকাতাভিত্তিক দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি নিজেই অ্যাকাউন্ট বাতিলের অনুরোধ জানিয়ে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে চিঠি দিয়েছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৫ ডিসেম্বর তারা দাতব্য সংস্থাটির বৈদেশিক অনুদান নীতিমালার লাইসেন্স নবায়ন করতে প্রত্যাখান করেছে। শত্রুতামূলক অনুদান পাওয়ার বিষয়ে অবগত হওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের পর থেকে মিশনারিজ অব চ্যারিটিজের বৈদেশিক অনুদানের রেজিস্ট্রেশন আর বৈধ থাকবে না।

তবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মিশনারিজ অব চ্যারিটিজের কর্মকর্তারা।

মিশনারিজ অব চ্যারিটির খবর সামনে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ময় প্রকাশ করেন মমতা। টুইটারে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘বড়দিনের উৎসবের মধ্যে মাদার তেরেসা-র মিশনারিজ অব চ্যারিটির সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছে শুনে আমি বিস্মিত। মিশনারিজ অব চ্যারিটির ২২ হাজার রোগী এবং কর্মীরা খাবার এবং ওষুধ পাচ্ছেন না। আইন সবার উপরে হলেও মানবিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়া ঠিক নয়।’

সম্প্রতি গুজরাটে বিতর্কে জড়ায় মাদার তেরেসার সংস্থা। ধর্মান্তকরণের অভিযোগে মোদির রাজ্যে মিশনারিজ অব চ্যারিটির বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের হয়। গুজরাটের বডোদরা শহরে ওই সংগঠনের যে হোম রয়েছে, তার বিরুদ্ধে ধর্মান্তকরণ ছাড়াও হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করা হয় এমন কাজের অভিযোগ উঠে। তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয় সংগঠনের তরফে। তাদের দাবি, ওই হোমে কোনওভাবেই জোর করে কাউকে ধর্মান্তকরণ করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালে কলকাতায় মাদার তেরেসা মিশনারিজ অব চ্যারিটি স্থাপন করেন। কলকাতার পাশাপাশি ভারতে এবং দেশটির বাইরেও বহু জায়গায় সক্রিয় তার প্রতিষ্ঠিত এই চ্যারিটি। ভারতে ২৪৩টি হোম রয়েছে সংস্থার। কলকাতায় প্রধান কার্যালয় সরকারিভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ হয়ে যাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও সংস্থার একজন সদস্য বলেন, ‘গোটা দেশে ও বিদেশে অনেক সেবামূলক কাজের সঙ্গে আমরা যুক্ত। হাজার হাজার অসুস্থ মানুষের সেবা চলে। কিন্তু এর ফলে সেই রোগীদের খাবার থেকে ওষুধ সরবরাহ সমস্যার মুখে পড়বে।’