তেলের চাহিদা কমে যাওয়ার শঙ্কায় ওপেক

তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক আশঙ্কা করছে, ২০২৩ সালে বিশ্বে তেলের চাহিদা কমে যেতে পারে। ওপেক প্রতিনিধি ও তেল খাতের সূত্রের বরাতে এখবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

অপরিশোধিত তেল ও জ্বালানির চড়া দাম মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতিতে ভূমিকা রেখেছে। ২০২০ সালে মহামারিতে জ্বালানির চাহিদা কম থাকলেও এই বছর ২০১৯ সালের চাহিদা ছাড়িয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে জ্বালানির মূল্য রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। উচ্চ মূল্যের কারণে ২০২২ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে এবং ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধি মন্থর হতে পারে।

দ্য অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) ২০২৩ সালের চাহিদা নিয়ে নিজেদের প্রথম পূর্বাভাস জুলাই মাসে প্রকাশ করতে যাচ্ছে। এই পূর্বাভাসে ওপেকের সরবরাহ নীতি কেমন হবে তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হবে।

এক ওপেক প্রতিনিধি এবং ওপেকের চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র জানায়, তারা প্রত্যাশা করছেন ২০২৩ সালে বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল (বিপিডি)  বা কম হতে পারে। যা ২০২২ সালের প্রত্যাশিত প্রতিদিন ৩৩ লাখ ৬০ হাজারের চেয়ে মাত্র ২ শতাংশ বৃদ্ধি।

ওপেক প্রতিনিধি বলেন, এমনকি চাহিদা যদি প্রতিদিন ১০ লাখ ব্যারেল হয় হয়, তবু তা প্রবৃদ্ধি কিন্তু বেশি না।

প্যারিসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) পশ্চিমা সরকারকে জ্বালানিনীতি বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। সংস্থাটিও ২০২৩ সালে চাহিদা নিয়ে মাসিক প্রতিবেদন বুধবার প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন একজন মুখপাত্র।

ওপেকের বিবেচনায় জ্বালানি চড়া মূল্যের কারণে তেলের চাহিদা কমে যাবে।

আরও দুই ওপেক প্রতিনিধি জানান, চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে আগামী মাসগুলোতে তেলের ব্যবহারে প্রভাব পড়বে। যদিও এদের একজন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা কমার খুব কম ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

ওপেক বা আইইএ-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন এমন একটি সূত্র জানান, তিনিও ২০২৩ সালে নিম্ন চাহিদা প্রত্যাশা করছেন। তার প্রাথমিক পূর্বাভাসে চাহিদা প্রতিদিন ২০ লাখ ব্যারেল বা কম হতে পারে। যা ২০২২ সালের তুলনায় ২৬ লাখ বিপিডি কম।

তিনি বলেন, অপরিশোধিত প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ১২০ ডলার হওয়ার কারণে চাহিদা কমে যাচ্ছে। এটি এরইমধ্যে ঘটতে শুরু করেছে।

তেলের চাহিদার পূর্বাভাসে অর্থনৈতিক ফলাফল ও ভূরাজনৈতিক অনিশ্চিয়তার কারণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। এই বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ও চীনে করোনাভাইরাস লকডাউনের এমন পরিবর্তন এসেছে।

ওপেক ২০২২ সালের তাদের মূল চাহিদার পূর্বাভাসে ৩২ লাখ ৮০ হাজার বিপিডির কথা উল্লেখ করেছিল। এই পূর্বাভাস ২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত হয়েছিল। পরে তা ৪০ লাখ বিপিডিতে বাড়ানো হয় কিন্তু পরে আবার তা কমিয়ে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার বিপিডিতে কমানো হয়।