ভারতীয় বিজ্ঞাপন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে উচ্ছ্বাস

সব বাবার পক্ষ থেকে 'সরি'

পরিবারে শ্রম বিভাজনে লৈঙ্গিক বৈষম্য কী করে নারীর জীবনকে সংকুচিত করে দেয় তাই নিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে ভারতের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান এরিয়েলইন্ডিয়া। প্রচারের পর থেকেই বিজ্ঞাপনটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ফেসবুকে বিজ্ঞাপনটি দেখা হয়েছে অন্তত ৩০ লাখ বার।

এরিয়েলইন্ডিয়ার বিজ্ঞাপনের একটি দৃশ্য

বিজ্ঞাপনটিতে দেখানো হয় এক বাবা তার মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখানে তিনি দেখতে পান তার মেয়ে একা হাতেই সামলাচ্ছে ঘরগৃহস্থালি ও কর্মক্ষেত্র। ফোনে অফিসে কথা বলতে বলতেই ধুয়ে ফেলছে বাসন, চা করে দিচ্ছে স্বামীকে। অথচ তার স্বামী ল্যাপটপে কাজ করতে করতে টিভি দেখছেন।

নিজের সন্তানকে এহেন দ্বিগুণ বোঝা বইতে দেখে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে বাবার হৃদয়। তিনি বুঝতে পারেন সংসার ও সন্তান পালন করতে গিয়ে কী ভয়াবহ ভুল তিনি করেছেন। গার্হস্থ্য শ্রম বিভাজনে লৈঙ্গিক বৈষম্যের দিকটি চোখে পড়ে যায় তার।

বিদায় নেওয়ার সময় মেয়েকে নিজের উপলব্ধির কথা জানান লজ্জিত ও দুঃখিত বাবা। তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখিত যে এতসব তোমাকে একাই করতে হচ্ছে। আমি দুঃখিত, যখন তুমি রান্নাবাটি খেলতে তখন আমি তোমাকে নিষেধ করিনি। আমি তোমাকে বলিনি, এ সব শুধু তোমার কাজ নয়, তোমার বরেরও দায়িত্ব। আর বলতামই বা কিভাবে? আমিও তো তোমার মাকে কখনও সাহায্য করিনি। তুমি তো যা দেখেছ, তা-ই শিখেছ।’

শুধু তাই নয়, সন্তানদের সামনে ভুল উদাহরণ প্রতিষ্ঠিত করেছেন এমন সব বাবার পক্ষ থেকেই নিজের মেয়েকে 'সরি' বলেন ভুল বুঝতে পারা সেই বাবা।

এই বিজ্ঞাপন নিয়ে ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে দেখা যায় উচ্ছ্বাস। অনেকেই এরিয়েলইন্ডিয়াকে সাধুবাদ জানান এমন একটি সামাজিক সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন তৈরি করার জন্য। একজন তার টুইটার পোস্টে লেখেন, ‘কি চমৎকার বিজ্ঞাপন! দুর্দান্ত মার্কেটিং সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সমাজ সচেতনতামূলক বার্তা।’

অন্য একজন লেখেন, ‘এখনও সময় আছে, আমরা গৃহস্থালি শ্রম ভাগ করে নিতে পারি’

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে কনে দেখা নিয়ে আরেকটি বিজ্ঞাপন এমন সাড়া জাগিয়েছিলো ভারতে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত- এমনটাও মনে করছেন ভারতের দর্শকরা।

সূত্র এনডিটিভি

 

/ইউআর/