শরণার্থী সংকট নিরসনে তুরস্ক-ইইউ সমঝোতা

ইউরোপের চলমান শরণার্থী সংকট নিরসনে একটি চুক্তির ব্যাপারে সমঝোতায় উপনীত হয়েছে তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিশদ আলোচনার পর এ নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে উপনীত হবে দুই পক্ষ। ৮ মার্চ মঙ্গলবার আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

তুরস্কের সঙ্গে চলমান আলোচনাকে একটি বিশাল সাফল্য বলে উল্লেখ করেছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের প্রেসিডেন্ট জিন ক্লড ঝংকার-এর মুখপাত্র মার্টিন সিলমার এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, তুরস্কের সঙ্গে যুগান্তকারী চুক্তি।

ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, নতুন পরিকল্পনায় অনিয়মিত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে যারা গ্রিসে পৌঁছাচ্ছেন, তাদেরকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হবে। আগামী ১৭-১৮ মার্চ ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের নির্ধারিত বৈঠকে এ পরিকল্পনার ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। চুক্তির ব্যাপারে নিজের আশাবাদের কথাও জানান ডোনাল্ড টাস্ক।

noname

সোমবার দিনভর আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল ইউরোপের শরণার্থীদের গ্রহণের বিপরীতে তুরস্ক কি পাবে? এখন পর্যন্ত আলোচনা অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যে তুরস্ককে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার প্রদানের কথা রয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলোর। তবে আঙ্কারা চাইছে এ অর্থের পরিমাণ দ্বিগুণ করতে।

এর আগে সোমবার এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে জড়ো হন বিশ্বনেতারা। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলসহ ইউরোপের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোগলু। এখন পর্যন্ত পরিকল্পনার বেশিরভাগ প্রস্তাবনায় উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রধান মার্টিন শুলজ জানান, ব্রাসেলসে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোগলু’র সঙ্গে ইইউ নেতাদের বৈঠকে এ বাড়তি অর্থ দাবি করে আঙ্কারা।

noname

এর আগে গত সপ্তাহে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক বলেছিলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান জানিয়েছেন তুরস্কের সমুদ্রসীমা পাড়ি দিয়ে যাওয়া শরণার্থীদের ফিরিয়ে আনতে সম্মত আঙ্কারা।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদের মতে, তুরস্ক শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে সক্ষম হলে এবং তারা  আর ইউরোপে না আসলে ওইসব শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার বিনিময়ে ইস্তাম্বুল ইউরোপের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার যোগ্য এবং তাদের দাবি যুক্তিযুক্ত।

এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার ২৭ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে প্রতিবেশি দেশ তুরস্ক। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম ইউরোপ এতবড় অভিবাসী সংকটে পড়েছে। ২০১৫ সালে অন্তত ১০ লাখ শরণার্থী ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছেন। ক্রমবর্ধমান শরণার্থীদের কোটা প্রথা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে ইউরোপের দেশগুলো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই আরও শরণার্থী গ্রহণে তুরস্কের ওপর চাপ দিতে এ সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। সূত্র: আল জাজিরা।

/এমপি/