প্রমাণসিদ্ধ হয়ে উঠছে যৌনমিলনে জিকা ছড়ানোর ধারণা

 

যৌন মিলনের মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ছড়ানো এবং জিকার কারণে অস্বাভাবিক আকৃতির মাথা নিয়ে শিশু জন্মানো নিয়ে আগে যেমনটা ধারণা করা হয়েছিল তা ক্রমাগত প্রমাণসিদ্ধ হয়ে উঠছে বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

গত মাসে ল্যাটিন আমেরিকায় জিকার প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা বলে ঘোষণা করেছিল সংস্থাটি। সে সময় বলা হয়েছিল যে মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ানো জিকার জন্য পারিপার্শ্বিক অবস্থা দায়ী। তবে, মঙ্গলবার জরুরি কমিটির এক বৈঠকের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক মার্গারেট চ্যান বলেন ‘বিভিন্ন দেশের জিকা আক্রান্তদের পরীক্ষা করে দেখা গেছে যৌন মিলনের মাধ্যমে আক্রান্তদের দেহ থেকে অন্যদের দেহে জিকা ভাইরাস ছড়ানোর ব্যাপারে যে আগে যে ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়েও অনেক বেশি সাধারণ প্রবণতা এটি।’

এডিস মশার মাধ্যমে জিকা ছড়িয়ে থাকে

যৌনমিলনের মাধ্যমে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির ওপর গবেষণা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। চ্যান জানান, ৯টি দেশে গিলেইন-বারে সিনড্রোমের মতো ভয়াবহ স্নায়বিক রোগ ধরা পড়েছে। তার মতে, এখন আর জিকাকে কেবল গর্ভবতী নারীদের জন্য হুমকি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে না, বরং শিশু, কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ সবার জন্যই হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত ব্রাজিল আর ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়াতে অস্বাভাবিক মাথা নিয়ে শিশু জন্মের জন্য জিকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলেও অন্য দেশগুলোতেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে ডব্লিউএইচও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। আর তাই, ছোট বা অস্বাভাবিক আকৃতির মাথা নিয়ে নতুন করে জন্মানো শিশুদের নিয়ে গবেষনঅ জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

জিকা ভাইরাস নিয়ে গবেষণা

ডব্লিউএইচও’র হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের ৩১টি দেশে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, এডিস প্রজাতির মশা থেকে জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। জ্বর, জয়েন্ট পেইনসহ ছোটখাটো কিছু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় এ ভাইরাসের কারণে। আবার তা এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে সেরেও যায়। তবে বিপত্তি তৈরি হয় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে। গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মাইক্রোসেফালি তথা বিকৃত ও ছোট মাথা নিয়ে শিশু জন্ম নিতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এসব শিশুর বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি থাকে, শারীরিক বৃদ্ধি কম হয় এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সূত্র: আল জাজিরা

/এফইউ/বিএ/