লিবিয়ার রাজধানীতে চলছে সংঘাত, আতঙ্কে স্থানীয়রা

টানা দ্বিতীয়দিনের মতো তীব্র সংঘাত প্রত্যক্ষ করলো লিবিয়া। সশস্ত্র গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ এক নেতার মৃত্যুর পর বুধবার (১৪ মে) সকাল পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি হামলা চলেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির রাজধানী ত্রিপলির অধিবাসীরা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ত্রিপলির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হানাহানি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটিতে কর্মরত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন ইউএনএসএমআইএল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

একদিকে যখন সোমবার থেকে সাম্প্রতিক এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়, সে সময় বিভক্ত দেশটির জাতীয় ঐক্যের সরকারের (গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল ইউনিটি বা জিএনইউ) প্রেসিডেন্ট আবদুলহামিদ আল-দেবেইবাহ তার ক্ষমতা সুসংসত করছেন বলে রয়টার্সের কাছে খবর রয়েছে। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট দেবেইবাহ তুরস্কের একজন মিত্র হিসেবে পরিচিত।

ত্রিপলিতে চলমান সংঘর্ষ দীর্ঘস্থায়ী হলে রাজধানীর বাইরের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও এতে জড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে ২০২০ সালের যুদ্ধবিরতির পর লিবিয়ায় যে আপাত শান্ত অবস্থা বিরাজ করছিল তা হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম লিবিয়ান অবজার্ভার জানিয়েছে, দেবেইবাহ সমর্থিত ট্রিপল ফোর ব্রিগেড এবং স্পেশাল ডেটারেন্স ফোর্সের (রাদা) মধ্যে বুধবারের মূল সংঘর্ষ শুরু হয়। রাদা হচ্ছে ত্রিপলি ভিত্তিক শেষ শক্তিশালী সশস্ত্রগোষ্ঠী, যা দেবেইবাহের নিয়ন্ত্রণে নেই।

ত্রিপলির বিভিন্ন এলাকায় আটকে পড়া বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হঠাৎ শুরু হওয়া এ সহিংসতা তাদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। দাহরা এলাকায় বসবাসকারী এক ব্যক্তি বলেন, এতটা ভয়ানক পরিস্থিতি কল্পনাও করিনি। গোলাবারুদের হাত থেকে বাঁচতে পরিবার নিয়ে একটি ঘরে আশ্রয় নিয়েছি।

লিবিয়ায় ২০১১ সালে ন্যাটো সমর্থিত অভ্যুত্থানের পর দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মর গাদ্দাফির পতন হয়। এরপর থেকে অস্থিতিশীলতার ঘেরাটোপে আটকা পড়ে গেছে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি রফতানিকারক দেশটি। পরিস্থিতি এতোটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে, পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্রোহীদের কোন্দলে ২০১৪ সালে দেশটি কার্যত দুভাগ হয়ে পড়ে। তবে ২০২০ সালের যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে মারাত্মক যুদ্ধের আপাত অবসান হয়।