আদালতের হস্তক্ষেপে বহাল থাকছে ৫ হাজার ভেনেজুয়েলান অভিবাসীর বৈধতা

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত গত সপ্তাহে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ভেনেজুয়েলান অভিবাসীর বৈধতা বাতিল করে রায় দিয়েছিল। তবে তাদের মধ্যে পাঁচ হাজার ভেনেজুয়েলানের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এক মার্কিন ফেডারেল বিচারক। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

শুক্রবার (৩০ মে) রাতে দেওয়া ওই আদেশে বিচারক এডওয়ার্ড চেন বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে ওই ভেনেজুয়েলান অভিবাসীদের কাগজপত্রের বৈধতা বাতিল করে তাদের সাময়িক আইনি সুরক্ষা বাতিল করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি) ক্রিস্টি নোম। ওই পদক্ষেপের মাধ্যমে নিজের এখতিয়ার অতিক্রম করেছিলেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসী নীতির আওতায় ভেনেজুয়েলান অভিবাসীদের সাময়িক সুরক্ষা মর্যাদা (টেমপোরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাস বা টিপিএস) বাতিলের বিরুদ্ধে আগেই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন বিচারক চেন। গত ১৯ মে মার্কিন সর্বোচ্চ আদালত ওই রায় বাতিল করে দেয়। তবে আদালত জানায়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আইনি প্রতিকার চাইতে পারবেন ভেনেজুয়েলানরা।

এই বৈধতা মূলত ২০২৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বহাল থাকার কথা ছিল। বাইডেন প্রশাসনের শেষ দিকে টিপিএস কর্মসূচিতে ১৮ মাস সময় বৃদ্ধি করা হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে সেক্রেটারি নোম এই বর্ধিত মেয়াদ বাতিলের চেষ্টা করেন।

টিপিএস হলো এমন একটি সুবিধা, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সশস্ত্র সংঘাত বা অন্য কোনও পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ীভাবে থাকার ও কাজ করার সুযোগ দেয়।

মার্কিন প্রশাসন টিপিএস বাতিলের সিদ্ধান্ত দিলে বিচারক চেনের শরণাপন্ন হন ভেনেজুয়ালদের আইনজীবী এবং অধিকার সংগঠন ন্যাশনাল টিপিএস অ্যালায়েন্স। তারা বলেন, কাগজপত্রের বৈধতা বাতিল হলে অভিবাসীরা চাকরি হারাতে পারেন এমনকি জোর করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।

সব কিছু যাচাই বাছাই করে অভিবাসীদের পক্ষেই রায় দিয়েছেন চেন। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী এমন কোনও বিধি নেই, যা হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে টিপিএস বাতিল করার এখতিয়ার প্রদান করে। অবশ্য, বৈধতা বাতিল হওয়া সাড়ে তিন লাখের মধ্যে হাজার পাঁচেক মানুষের হাতেই এমন নথি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই পাঁচ হাজার মানুষ মার্কিন অর্থনীতি বা জাতীয় নিরাপত্তার ওপর তেমন প্রভাব ফেলবেন না, বরং এসব নথি বাতিলের পেছনে যুক্তিগুলো দুর্বল।

এদিকে, চেনের এই রায়ের কয়েকঘণ্টা আগে সর্বোচ্চ আদালত ট্রাম্পের পক্ষে ভিন্ন এক সিদ্ধান্ত প্রদান করে। বাইডেন আমলে চালু থাকা প্যারোল কর্মসূচিতে সাময়িকভাবে প্রায় পাঁচ লাখ ৩২ হাজার মানুষ সাময়িক অভিবাসন সুবিধা পেয়েছিলেন। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তাদের এই সুরক্ষা বাতিলের অনুমতি পেল ট্রাম্প প্রশাসন।