বঙ্গোপসাগরে ভারতের ব্যালাস্টিক মিসাইল পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে ডুবোজাহাজ (সাবমেরিন) থেকে পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম ব্যালাস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা চালায় ভারত। আর এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সমুদ্রগর্ভ থেকে ভারত যে মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে, তাতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মার্ক টোনার ভারতের ব্যালাস্টিক মিসাইল পরীক্ষা সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা পারমাণবিক এবং মিসাইল উন্নয়নের যে কোনও ঘটনায় অবগত রয়েছি, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণ্ন করে। এজন্য সকল রাষ্ট্রের কাছে আমরা পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার ও উন্নয়ন কমিয়ে আনার আহ্বান জানাই।’

তিনি জানান, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়া দিল্লিকে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টোনার বলেন, আমি ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে চাইছি না। তবে আমরা কোনওভাবেই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ভঙ্গ হোক, এমনটা চাইনা। আমি এ সম্পর্কে সচেতন রয়েছি।

ভারতের কে-৪ ব্যালাস্টিক মিসাইল

উল্লেখ্য, ২২ মার্চ মঙ্গলবার ভারত আবার কে-৪ ব্যালাস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে ৯ মিটার লম্বা একটি ডুবোজাহাজের প্রতিরূপ (রেপ্লিকা) থেকে ওই মিসাইল ছোড়া হয়। পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম মিসাইলটি প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম। এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য এবং জার্মানির পাশে নাম লেখাতে পারলো। যারা ভূমি, আকাশ এবং পানি – এই তিন স্থান থেকেই পরমাণু আক্রমণ চালাতে সমর্থ।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, সমুদ্রের গভীর থেকে পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতা থাকলে তবেই একটি দেশকে প্রকৃত পরমাণু শক্তিধর বলা যায়। কারণ কোনো দেশের মূল ভূখন্ড প্রতিপক্ষের পরমাণু হামলার শিকার হয়ে গেলে, পাল্টা হামলা সমুদ্রপথেই চালাতে হয়। মূল ভূখণ্ডের সব পরমাণু পরিকাঠামো নষ্ট করে দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই প্রতিপক্ষ পরমাণু হামলা চালানোর ছক কষে থাকে। কিন্তু সমুদ্রে লুকিয়ে থাকা সকল পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করা সম্ভব হয় না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ঘনঘন মিসাইল পরীক্ষা আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। সূত্র: পিটিআই, আইবি টাইমস, ডেকান ক্রনিকল। 

/এসএ/