তাইওয়ানে সোমবার দিনে-দুপুরে মায়ের সামনে চার বছর বয়সী এক মেয়েকে শিরশ্ছেদের ঘটনায় মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। অপেক্ষাকৃত কম অপরাধের কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় নিরাপদতম স্থান বলে বিবেচিত তাইওয়ানে এ ধরনের ঘটনায় শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত আর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তারা। আর মঙ্গলবার এক পুলিশ সদস্য ছুরিকাঘাতের শিকার হওয়ার পর চলমান আতঙ্কে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে। উল্লেখ্য, গত চার বছরের মধ্যে এটি তাইওয়ানে শিশুর ওপর তৃতীয় হামলা।
সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে তাইপের নেইহু অঞ্চলে এক ব্যক্তি ৪ বছর বয়সী এক তাইওয়ানি শিশুকে মোটরসাইকেল থেকে টান দিয়ে নামিয়ে ফেলেন এবং ছুরি দিয়ে তার শিরশ্ছেদ করেন। সে সময় মোটর সাইকেলে থাকা শিশুর মা বাধা দিতে চাইলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। পথচারীরাও তাকে থামাতে ব্যর্থ হন।
এ ঘটনায় তাইওয়ানবাসী প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সোমবার রাতে, ওই হত্যাকারীকে পুলিশ স্টেশনে নেওয়ার সময় উত্তেজিত জনতা তাকে মারতে শুরু করে। পুলিশ বলছে, হত্যাকারী মাদক চক্রের সাথে জড়িত থাকার দায়ে আগেও আটক হয়েছিলেন। পরে মানসিক অসুস্থতার কারণে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তিন সন্তানের একজন মা লিন্ডি ওয়াং বিবিসিকে বলেন, ‘সন্তানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকার পরও একজন মা তার সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি! তাহলে আমরা কিভাবে সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত থাকব?’
ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সির উপ-মহাপরিচালক হুয়াং সাং জেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, ‘এটি কোনও অপরাধজনিত সমস্যা নয়, এটি সামাজিক সমস্যা।’
এদিকে মঙ্গলবার এক ব্যক্তিকে ছুরি নিয়ে ট্রেনে ওঠার কারণ জিজ্ঞাসা করার পর ওই পুলিশের মাথায় ছুরিকাঘাত করেন সে সন্দেহভাজন। ওই পুলিশ সদস্য আহত হলেও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।
তাইওয়ানে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সমালোচনা জানিয়ে আসলেও বেশিরভাগ তাইওয়ানবাসী এই আইনকে সমর্থন করে থাকেন। আর নতুন হত্যাকাণ্ডের পর আরও বেশি করে আইনটি বাস্তবায়নের দাবি তুলেছেন তারা। সূত্র: বিবিসি, ইয়াহু নিউজ
/এফইউ/বিএ/