মঙ্গলবারের শুনানিতে ফিলিপাইনের ওই ব্যাংকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা কেবল ওই অর্থ উত্তোলনের বিষয়টিকে বিলম্বিত করতে পারতেন, কিন্তু তা বন্ধ রাখতে পারতেন না। ব্যাংকটির লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স গ্রুপের প্রধান মারিয়া সেলিয়া এস্তাভিলো জানান, আদালতের আদেশ ছাড়া কোনও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ রাখার অধিকার তাদের নেই। তারা কেবল একে সন্দেহজনক লেনদেন বলে নথিভুক্ত করতে পারতেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। মারিয়া বলেন, ‘আইনানুসারে, কোনও অর্থ লেনদেন আটকে রাখার অধিকার আমাদের নেই।’
ব্যাংকের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে সিনেট কমিটি। সিনেটর সার্জিও ওসমেনা ওই বক্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আপনি পুরো বিশ্বকে জানান দিচ্ছেন, ‘আপনার অর্থ ফিলিপাইনে পাঠান, আমরা তা আটকাবো না, তা সরাসরি ক্যাসিনো এবং রেমিট্যান্স কোম্পানিতে যাবে।’”
ওসমেনা প্রশ্ন তোলেন, ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট লরেঞ্জো তান ওই মিলিয়ন ডলার লেনদেনের বিষয়ে কেন সতর্ক করেননি। প্রায় সব অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরেই কেবল তিনি সতর্কতা জারি করেন। ওসমেনা জানান, ব্যাংকের ওই অর্থ বৈধপথে এসেছে কিনা, অথবা ওই অর্থ সঠিক ব্যক্তির হাতেই যাচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অর্থ উত্তোলন আটকে রাখতে পারতেন।
মারিয়া জানান, তিনি সিনেটর ওসমেনার যুক্তি বুঝতে পারছেন, কিন্তু আইনগতভাবে তাদের সেই অধিকার নেই। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক কেবল ওই লেনদেন বিলম্বিত করে তাদের সাথে কথা বলতে পারতো।’ ব্যাংক ওই অর্থ লেনদেনে বাধা দিতে পারতো কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মারিয়া বলেন, ‘তাতেও একই ঘটনা ঘটতো।’
ওসমেনা বলেন, ‘তাতে একই ঘটনা ঘটতো না এবং আপনি কমিটির সামনে খুব একটা অকপট নন।’ তবে মারিয়া জানান, তিনি অনেক অকপটভাবেই কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘প্রচলিত আইনের কারণেই ব্যাংক ওই লেনদেন বন্ধ করতে পারতো না। এমনকি ব্যাংক নিয়ন্ত্রকদেরও সেই অধিকার নেই।’
ওসমেনা জানান, তিনি বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছেন, আর তারা বিচক্ষণতার সাথে সন্দেহজনক লেনদেন আটকে দিয়ে থাকেন। তবে মারিয়া জানান, আরসিবিসি-র সাথে আইনের অর্থটা এর থেকে ভিন্ন এবং সব ব্যাংকেরই এক রকম বাধ্যবাধকতা এবং অধিকার রয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাকড করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ চুরি করে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার ব্রাঞ্চের চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। সূত্র: ইনকোয়ারার।
/এসএ/বিএ/