ছিনতাইকারীর সঙ্গে যে কারণে ছবি তুলেছিলেন মিসরীয় বিমানের আরোহী


ছিনতা্‌ইকারী মুস্তফার সঙ্গে বেন ইনেস (ডানে)মিসরের বিমান ছিনতাই ও বেশ কয়েকজন আরোহীকে জিম্মি করে রাখার ঘটনায় বাইরে যখন উদ্বেগ ও উত্তেজনা চলছে, ঠিক সে সময় ছিনতাইকারীর সঙ্গে ছবি তুলেছেন বেন ইনেস নামের এক ব্রিটিশ তরুণ। এরইমধ্যে ইনেসের ছবিটি প্রকাশ করা হয়েছে। ওইরকম উত্তেজনার মুহূর্তে ছিনতাইকারীর সঙ্গে ছবি তোলার কারণের যথার্থ ব্যাখ্যা ইনেসের কাছেও নেই। তবে তিনি মনে করছেন, নিজেকে আনন্দিত রাখতেই কাজটি করেছেন।
মঙ্গলবার মিসরের স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ইজিপ্ট এয়ারের বিমানটি আলেকজান্দ্রিয়া থেকে ৬২ জন আরোহী নিয়ে উড্ডয়ন করে। এর কিছু সময় পরই এটি ছিনতাইয়ের শিকার হয়। পরে বিমানটি সাইপ্রাসে জরুরি অবতরণে বাধ্য করা হয়। পাইলট দাবি করেছেন, ‘ছিনতাইকারী’ তার গায়ে বিস্ফোরক বেল্ট রয়েছে বলে হুমকি দিয়ে বিমানটি সাইপ্রাসে অবতরণ করাতে বাধ্য করেন। তবে সাইপ্রাস কর্তৃপক্ষ এখন বলছে, যে বিস্ফোরক বেল্টের ভয় দেখিয়ে মঙ্গলবার মিসরের বিমানটি ছিনতাই করা হয়েছিল সেই ‘আত্মঘাতী বেল্টটি’ আসলে ভুয়া ছিল।
সাইপ্রাসে অবতরণের কিছুক্ষণ পর বিমানের ক্রু আর ৪ বিদেশি নাগরিককে রেখে বেশিরভাগ জিম্মিকে ক্রমান্বয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। সবশেষ জিম্মি থাকেন ৭ জন, যাদের পরবর্তীতে বিমান থেকে নেমে আসতে দেখা যায়। এরমধ্যে ৩ জন যাত্রী এবং বাকিরা বিমানের ক্রু। ওই তিন যাত্রীর একজন বেন ইনেস। তার বয়স ২৬ বছর।
প্রকাশ হওয়া ছবিতে দেখা যায়, ছিনতাইকারীর পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ইনেস। তার ঠোঁটে হাসি। ‘ছিনতাইকারী’কেও আনন্দিতই দেখাচ্ছে।

মুক্তি পাওয়ার পর বিমান থেকে আরও দুই যাত্রীসহ ইনেস দৌড়ে পালাচ্ছেন
ছবিটি তোলার কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইনেস বলেন, ‘আমি নিশ্চিত নই ঠিক কী কারণে কাজটি করেছি। আমি কেবল দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে এবং মুখে আনন্দ ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি। তাছাড়া তার আত্মঘাতী বেল্টটি আসলেই বিস্ফোরক কিনা তা কাছ থেকে দেখার ইচ্ছে হয়েছিল। সে সময় ওই লোকটির সঙ্গে কথা বলার জন্য বিমানে একজন দোভাষীও পেয়ে গেলাম। তার সহায়তা নিয়ে ওই লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম যে তার সঙ্গে ছবি তুলতে পারি কিনা। তিনি বললেন ঠিক আছে। পরে একজন ক্রু আমাদেরকে ছবিটি তুলে দিলেন। এটি এ পর্যন্ত তোলা সবচেয়ে সেরা ছবি।’

ইনেস জানান, কাছ থেকে দেখার পর তার সন্দেহ হলো যে বিস্ফোরক বেল্টটি ভুয়া হতে পারে। তারপর তিনি তার আসনে ফিরে যান।

বিমান থেকেই যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বন্ধুদের কাছে ছবিটি পাঠান ইনেস।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ইনেসের এ পদক্ষেপটির নিন্দা জানালেও তার স্বজন ও বন্ধুরা এর প্রশংসা করেছেন। সূত্র: গার্ডিয়ান

/এফইউ/বিএ/