নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ওই নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব কার্যকরের সময়সীমা পার হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে চীন তা আটকে দেয়। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলার পর ১৮ ফেব্রুয়ারি ভারত জাতিসংঘের কাছে ১১ ব্যক্তি এবং একটি সংগঠনের বিরুদ্ধে ‘ভারতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার সঙ্গে জড়িত’ উল্লেখ করে। এসব ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে আইএস এবং আল-কায়েদার নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক কমিটির অধীনে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য প্রস্তাব পেশ করে। ওই প্রস্তাবে আজহার মাসুদের নামও রয়েছে।
ভারতের আবেদনে পাঠানকোট হামলায় আজহার মাসুদের জড়িত থাকার শক্ত প্রমাণ ছিল বলে দাবি করা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা না হলে তা আজহার এবং তার সংগঠনকে দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস ছড়াতে সুযোগ করে দেবে।
সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারত কাউন্টার-টেররিজম এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টোরেট (সিটিইডি)-এর সহায়তায় ওই প্রস্তাব পেশ করে। তাতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের সমর্থনও রয়েছে।
জাতিসংঘ কমিটি থেকে বলা হয়েছিল, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কোনও পক্ষের আপত্তি না থাকলে তা গৃহীত হবে। কিন্তু সময়সীমা অতিক্রমের মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে চীন জাতিসংঘ কমিটির কাছে ওই প্রস্তাব স্থগিত রাখার আবেদন করে। চীন জাতিসংঘের ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচ শক্তির একটি। ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন অন্য দেশগুলো হলো – যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া এবং ফ্রান্স।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে ‘সমঝোতা’র ভিত্তিতে প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে, অথচ পাকিস্তান ওই কমিটির অংশ নয়।
২০০১ সালে জাতিসংঘ জয়েশ-ই-মোহাম্মদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু ভারতের আবেদন সত্ত্বেও সংগঠনটির প্রধান আজহার মাসুদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। তখনও চীন আজহারের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ভেটো দিয়েছিল।
সম্প্রতি পাকিস্তানের যৌথ তদন্তদল পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে অনুসন্ধান করে হামলার সঙ্গে মাসুদ আজহারের কোনও রকম সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায়নি বলে জানিয়েছে। তবে ভারতের দাবি, মাসুদ আজহার ও তার ভাই আব্দুল আসগর রউফ পাঠানকোট হামলার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। আজহারকে ১৯৯৯ সালে ভারতের একটি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় ও পাকিস্তানে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ছিনতাইকৃত বিমান আইসি ৮১৪ এর জিম্মি করা যাত্রীদের বিনিময়েই তাকে মুক্তি দেয় ভারত সরকার।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি দিবাগত রাতে পাঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। ওই ঘটনায় ৬ হামলাকারী আর নিরাপত্তা বাহিনীর ৭ সদস্য নিহত হন। ঘটনার পর থেকেই হামলার পেছনে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত সশস্ত্র সংগঠন জয়েশ-ই-মোহাম্মদকেই দায়ী করে আসছে ভারত। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
/এসএ/এফইউ/