আফ্রিকার সাহেল থেকে ফরাসি সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা ম্যাঁক্রোর

পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে থাকা নিজেদের প্রায় তিন হাজার সেনা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো। শুক্রবার ভার্চুয়ালে জি-৫ সম্মেলনে যোগ দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

পশ্চিমা আফ্রিকায় জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদা এবং আইএস দমনে ফরাসি সেনারা দীর্ঘদিন ধরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে সংঘাত কবলিত সাহেল অঞ্চলে প্রায় ৮ বছর ধরে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীদের নানা ভাবে সহায়তা দিয়ে আসছে ফরাসি বাহিনী। কিন্তু গত মাসে ম্যাক্রোঁ বলেন, সেখানে থাকা অর্ধেক সৈন্য সরিয়ে নেওয়া হবে।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার আফ্রিকার নাইজার, মালি, চাদ, বুরকিনা ফাসো এবং মরিতানিয়াকে নিয়ে গড়া জি-৫ জোটের ভার্চুয়াল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের পর সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট জোটের রাষ্ট্র প্রধানদের বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতিব্ধ। তবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে তাও মানিয়ে নেয়া'।

ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দেন, ‘ফ্রান্সে আড়াই থেকে তিন হাজার সেনা যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে আফ্রিকার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছি না। সশস্ত্র জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য অব্যাহত থাকবে। সাহেলে আমাদের চিরকাল থাকার কোন ইচ্ছে নেই। আমাদের থাকতে বলা হয়েছিল এজন্য এতদিন ছিলাম’।

সাহেল অঞ্চলে ফরাসি সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার মধ্যেও সেখানে সন্ত্রাসী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্রান্সের এমন সিদ্ধান্তে সাহেলের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। 

আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল বহুদিন ধরেই অস্থিতিশীল। ২০১২ সালে সেখানকার বহু এলাকা দখল করে নেয় আল-কায়েদাপন্থী জঙ্গিরা। এতে করে ওই এলাকার বিদ্রোহী গোষ্ঠী তুয়ারেগ কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ফ্রান্সের নেতৃত্বাধীন পাঁচ জাতির বাহিনী (জি-ফাইভ সাহেল নামে পরিচিত) অভিযান চালিয়ে জঙ্গিদের উৎখাত করলেও পরে আবারও সংঘটিত হয় জঙ্গিরা।

সাহেল অঞ্চলে সেনা ক্যাম্পগুলো লক্ষ্য করে প্রায়ই জঙ্গিরা হামলা চালায়। ওই মরু অঞ্চল বিদেশিদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এসব অঞ্চল থেকে মাঝেমধ্যেই পর্যটকদের অপহরণ করে উগ্রপন্থীরা। অঞ্চলটির উগ্রপন্থীদের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের যোগসূত্র রয়েছে।