গুপ্ত পরিবারের দুই ভাই আমিরাতে গ্রেফতার

ধনকুবের গুপ্ত পরিবারের দুই ভাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে গ্রেফতার হয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আমিরাত কর্তৃপক্ষ এই ঘোষণা দিয়েছে। অতুল ও রাজেশ গুপ্তের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকায় সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নেওয়া এবং অন্যায় প্রভাব কাজে লাগানোর অভিযোগ রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে তাদের প্রত্যর্পণের আলোচনা চলছে।

দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিচারিক কমিশনের তদন্ত শুরুর পর ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়েন গুপ্ত পরিবারের দুই ভাই। লাভজনক রাষ্ট্রীয় চুক্তি লাভ এবং শক্তিশালী সরকারি নিয়োগকে প্রভাবিত করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে পরিবারটি।

দুবাই পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় মানি লন্ডারিং এবং ফৌজদারি অভিযোগে জড়িত থাকার জন্য’ দুই জনকে আটক করা হয়েছে। বাহিনীটি জানিয়েছে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ পাওয়ার পর ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। এই নোটিশের অর্থ প্রত্যর্পণ মুলতবি থাকা একজন ওয়ান্টেড ব্যক্তিকে অস্থায়ীভাবে গ্রেপ্তার করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অনুরোধ।

‌৯৯৩ সালে ভারত ছেড়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমায় গুপ্ত পরিবার। ভারতেও তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালে তাদের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সম্পত্তিতে অভিযান চালাতে একাধিক শহরে তল্লাশি চালায় ট্যাক্স কর্মকর্তারা। দিল্লিতে তাদের কোম্পানির অফিসেও অভিযান চালানো হয়।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক অভিযোগগুলোর সঙ্গে তাদের সঙ্গে জ্যাকব জুমার সম্পর্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ২০০৯ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন জ্যাকব জুমা। নয় বছর পর দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি।

গুপ্ত পরিবারের বিরুদ্ধে জুমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ব্যবহার করে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের সব স্তরে বিপুল রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যবসায়িক চুক্তি জিতেছে, উচ্চপদস্থ সরকারি নিয়োগকে প্রভাবিত করেছে এবং রাষ্ট্রীয় তহবিলের অপব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

গুপ্ত পরিবার এবং জ্যাকব জুমা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গুপ্ত পরিবার দেশে ছেড়ে পালানোর পর ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সরকার বলেছে যে তারা আশা করছে এই চুক্তি গুপ্তদের অভিযোগের সম্মুখীন করতে সাহায্য করবে। তবে গ্রেফতারের পর দুই ভাইকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।

সূত্র: বিবিসি