টিভি ব্যক্তিত্ব ল্যারি কাডলো ট্রাম্পের নতুন অর্থ উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার তার নতুন অর্থ উপদেষ্টার নাম ঘোষণা করেছেন। রক্ষণশীল টিভি ধারাভাষ্যকার ল্যারি কাডলোই চালাবেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিল। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কাডলো নিজে গত পরশু সিএনবিসিতে তার এই নতুন চাকরির বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন। অন্যদিকে নিউ ইয়র্কারের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর তার অর্থনৈতিক ভাবনা। তিনি জানিয়েছেন, কেন তিনি ট্রাম্পকে কোনও নীতি গ্রহণ বা বর্জনের জন্য চাপ দেবেন না। 

ল্যারি কুডলো

বৃহস্পতিবার টুইটারে ট্রাম্প তার নতুন অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে ল্যারি কাডলোর নাম ঘোষণা করেছেন। সেই সঙ্গে টুইটার বার্তায় তিনি নিম্ন করহার, অপ্রতিদ্বন্দ্বী উদ্ভাবনী ক্ষমতা, বাণিজ্য সমতা ও বাড়তে থাকা শ্রমশক্তির ওপর ভর করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সফল হবে, এই আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন। ফিনানশিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরে যখন বাণিজ্য ও করখাত সংশ্লিষ্টদের আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন কাডলো, তখন তিনি নিজে সিএনবিসিতে আর অন্যদিনের মতোই অর্থনৈতিক বিষয়ে ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন।

কাডলো নিউ জার্সির মানুষ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের আমলে বাজেট কর্মকর্তা ছিলেন। সদ্য বিলুপ্ত বিয়ার স্টার্নস ব্যাংকে তিনি অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর থেকে সিএনবিসি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত অর্থনীতিবিষয়ক অনুষ্ঠানে তিনি ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এসবের সঙ্গে নিউ ইয়র্কার এটাও জানিয়েছে, তিনি সেই অল্প কয়েকজন ব্যক্তির একজন যারা ট্রাম্প ঘোষিত অর্থনৈতিক নীতির সমর্থনে প্রকাশ্যে কথা বলেন। ট্রাম্প কোন কোন অর্থনৈতিক বিষয়ে তার সাহায্য বিশেষভাবে চাইতে পারেন তা জানতে চাইলে কাডলো বলেছেন, করহার কর্তনের আর একটি বিল পাস করানো যায় কি না সেটা দেখার পাশাপাশি অবকাঠামো ও অভিবাসীদের নিয়ে নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ করা লাগতে পারে। সার্বিকভাবে বাণিজ্য সব চিন্তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে।

ট্রাম্পের সঙ্গে কিছু বিষয়ে তার মতোবিরোধ থাকলেও অনেক বিষয়ে আবার মিলও আছে। তবে তিনি কি ঠিক মনে করেন বা করেন না সে বিষয়ে তিনি ট্রাম্পকে কোন চাপ দিতে চান না। কাডলো বলেছেন, ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের কাজ প্রেসিডেন্টের সামনে সম্ভাব্য বিকল্পগুলো উপস্থাপন করা। তারপর তিনি যা চাইবেন সেটা বাস্তবায়নে কাজ করা। প্রেসিডেন্টকে কোন সিদ্ধান্ত নিতে চাপ দেওয়া এনইসির কাজ নয়। ইস্পাতের ওপর ট্রাম্পের প্রস্তাব করা শুল্কের বিষয়ে তিনি বলেছেন, আমিও রোনাল্ড রিগানের মতো সার্বিকভাবে শুল্ক আরোপ পছন্দ করি না। কিন্তু কখনও কখনও দর কষাকষির জন্য সেটার প্রয়োজন পড়ে। ট্রাম্পের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি নিজেও শুল্ক আরোপ পছন্দ করেন না। তবে কিছু বিশেষ দেশের বিরুদ্ধে তিনি শুল্ক আরোপের বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে চান। উদাহরণ হিসেবে চীনের কথা বলেছেন কাডলো।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থ উপদেষ্টা ল্যারি কাডলো পদত্যাগী অর্থ উপদেষ্টা গ্যারি কনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। মুক্ত বাণিজ্যে বিশ্বাসী ও ওয়াল স্ট্রিটের ঘনিষ্ঠ ৫৭ বছর বয়সী কন প্রভাবশালী গোল্ডম্যান স্যাক্স ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ট্রাম্পের নতুন ট্যাক্স নীতি বাস্তবায়নে তিনিই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে এমন ধারণা দিয়েছিলেন যে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপের বিরোধিতাই শেষ পর্যন্ত তার পদত্যাগের মতো পরিস্থিতিতে গড়িয়েছে। তবে শুল্ক আরোপ ছাড়া আরও অনেক বিষয়েই কন একমত হতে পারছিলেন না ট্রাম্পের সঙ্গে।