ক্ষতিপূরণ মামলায় জিতলেন ইরানের ভূপাতিত করা বিমানের আরোহীদের পরিবার

২০২০ সালে তেহরানের কাছে ভূপাতিত হওয়া বিমানের নিহত ছয় আরোহীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কানাডার একটি আদালত। রাতে এই পরিবারগুলো সুদসহ ১০ কোটি ৭০ লাখ কানাডীয় ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্টারিওর সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিস এর দেওয়া রায় অনুযায়ী নিহতদের স্বামী বা স্ত্রী, ভাই, সন্তান, ভাইপো এবং ভাইঝিদের এই ক্ষতিপূরণ পাবেন।

তেহরান থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পিএস৭৫২ কে আঘাত করে দুইটি ক্ষেপণাস্ত্র। ইরান জানায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ভেবে ভুল বশত বিমানটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।

বিমানের ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হয়। এদের মধ্যে ৫৫ জন ছিলেন কানাডার নাগরিক এবং ৩৫ জন কানাডার স্থায়ী আবাসিকতার অনুমোদনপ্রাপ্ত ছিলেন। নিহতদের স্বজনেরা ইরান এবং এই ঘটনার জন্য দায়ী বলে চিহ্নিত অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

ক্ষতিপূরণের অর্থ ইরানের কাছ থেকে কিভাবে আদায় করা হবে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। স্বজনদের আইনজীবী মার্ক আরনল্ড জানিয়েছেন তারা কানাডা এবং বাইরে থাকা ইরানিয়ানদের সম্পদ জব্দ করে অর্থ আদায় করার কথা ভাবছে।

কানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসি জানিয়েছে, আদালতে ইরান আত্মপক্ষ সমর্থন করেনি। আর এবারই প্রথমবার হতাহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ এসেছে।

গত বছর কানাডা সরকারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানটি ভূপাতিতের সম্পূর্ণ দায় ইরানের। আর এটি অযোগ্যতা এবং বেপরোয়া আচরণের ফলাফল।

২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি বিমানটি ভূপাতিতের পর প্রাথমিকভাবে ইরানি কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায় অস্বীকার করে। পরে প্রমাণ সামনে আসতে থাকলে ইরানের বিপ্লবী বাহিনীর এরোস্পেস বাহিনী জানায় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানটিকে ভুলবশত মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ভেবে বসে তাদের একটি আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট।

ওই সময়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ছিল ইরান। কারণ এর কয়েক দিন আগে ইরাকের দুই মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলা চালিয়ে জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। ৩ জানুয়ারি নিহত হন সোলাইমানি।