মালয়েশিয়ার অভিবাসন বন্দিশালায় দুই বছরে শতাধিক বিদেশির মৃত্যু

nonameমালয়েশিয়ার বিভিন্ন অভিবাসন বন্দিশালায় গত দুই বছরে শতাধিক বিদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। মালয়েশীয় সরকারের মানবাধিকার কমিশনের নথি পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নথিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন রোগ ও অজ্ঞাত কারণে এসব বিদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, এর আগে কখনও অভিবাসন বন্দিশালায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি। মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই মৃত্যুর পরিসংখ্যান তৈরি করেছে মানবাধিকার কমিশন। এ নথি অনুসারে, ২০১৫ সালে বন্দিশালাগুলোতে প্রাণ হারান ৮৩ জন আর ২০১৬ সালে ৩৫ জন। মৃত বিদেশিদের মধ্যে বেশিরভাগই মিয়ানমারের নাগরিক।

মালয়েশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের অভিবাসন বন্দিশালাগুলোতে এ মৃত্যুর হার বেশি কিনা তা জানা যায়নি। উভয় দেশের সরকার জানিয়েছে, এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয় না। মালয়েশিয়ার বন্দিশালাগুলোতে মৃত্যুর হার যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের গত বছর ১০জনের মৃত্যু হয়েছিল।

মৃত ১১৮ জনের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মিয়ানমারের নাগরিক। মিয়ানমার সরকারের নিপীড়নের মুখে পালিয়ে মুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকেই এসব বন্দিশালায় ছিলেন। যদিও মৃত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক মিয়ানমার ও দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেতা আং সান সু চির কঠোর সমালোচনা করে আসছেন গত অক্টোবরে রোহিঙ্গাদের ওপর অভিযানের। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা বন্ধে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে হস্তক্ষেপেরও আহ্বান জানান নাজিব রাজাক।

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বন্দিশালায় বিদেশিদের মৃত্যুর বিষয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

মানবাধিকার কমিশনার জেরাল্ড জোসেফ বলেন, বন্দিশালাগুলোর পরিবেশ ভয়াবহ। নিম্নমানের খাবার ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা আর চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বন্দিরা। এছাড়া বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন ও যৌন হয়রানিরও শিকার হন বন্দিরা।

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বন্দিশালার অবস্থা উন্নতির চেষ্টা করছেন তবে এক্ষেত্রে আর্থিক বরাদ্দের স্বল্পতা রয়েছে। উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নুর জাজলান মুহাম্মদ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি স্বীকার করছি বন্দিদের আধিক্য ও অবস্থা একেবারে আদর্শ নয়। আমরা সব সময় বন্দিশালাগুলো প্রক্রিয়া, স্বাস্থ্য ও ব্যবস্থাপনা উন্নত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদের বরাদ্দ একেবারে সীমিত। সূত্র: রয়টার্স।

/এএ/