তালেবানের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা

মার্কিন কর্মকর্তারা আফগানিস্তান তালেবানের সাবেক সদস্যদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করছেন। এসব বৈঠক আফগানিস্তান, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অজ্ঞাত স্থানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি এখবর জানিয়েছে।

5b53ff30b3506

তিন সিনিয়র তালেবান কমান্ডারকে উদ্বৃত করে এনবিসি জানিয়েছে, কাতারের দোহায় একটি হোটেলে সম্প্রতি একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অন্তত পাঁচ মার্কিন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

খবরে দাবি করা হয়েছে, তালেবানরা প্রায়ই সাবেক কমান্ডার ও রাজনৈতিক নেতাদের আলোচক ও মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজে লাগায়। আলোচনায় অংশ নেওয়া আলোচকদের অনেকেই যুক্তরাষ্ট্র বা আফগানিস্তানের হাতে কারাবরণ করেছে এবং এখন তাদের কোনও সক্রিয়তা নেই।

দোহা বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানায়, বৈঠকগুলো ছিল খুব বন্ধুত্বপূর্ণ এবং আলোচনার সময় চা ও কুকি সরবরাহ করা হয়েছে। হোটেলের ভেতরে ও বাইরে নিরাপত্তা ছিল কঠোর। এমনকি হোটেলের কর্মীদেরও বৈঠকের কক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

এনবিসি লিখেছে, তালেবান প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও কঠোর নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। কারণ রাশিয়া, চীন ও আরব দেশের গোয়েন্দাদের কাছে পরিচিত হতে চান না। অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, ধরা পড়া এড়াতে তালেবানরা দলবেঁধে যাতায়াত করেনি। এক অংশগ্রহণকারী বলেন, যখন তারা (মার্কিন) বৈঠকের স্থানে পৌঁছায়, আমরা তখন একজন একজন করে রওনা দেই।

খবরে দাবি করা হয়েছে, দোহার হোটেল কক্ষটি বৈঠকের জন্য নির্বাচনের কারণ হচ্ছে তালেবান ও মার্কিন কর্মকর্তারা প্রথম দিকে ‘কেউ কাউকে বিশ্বাস করছিলেন না’।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এই ধরনের বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। তবে জানিয়েছেন, আফগান সংঘাত নিরসনে উদগ্রিব ট্রাম্প প্রশাসন।

প্রতিরক্ষা দফতরের এক মুখপাত্র জানান, আফগান নেতৃত্বে আফগানদের শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ও সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে।

এনবিসি জানিয়েছে, দীর্ঘ ১৭ বছরের আফগান যুদ্ধের ইতি টানতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য তারা তালেবানদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় প্রস্তুতির কথাও কয়েকদিন আগে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন। তবে এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত ছিল, আফগান সরকারকেও আলোচনায় রাখতে হবে।

২০০১ সালে টুইন টাওয়ার হামলার পর আফগানিস্তানে তালেবানদের উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক অভিযান শুরু করে। এরমধ্য দিয়ে দেশটিতে এই দীর্ঘ সংঘাতের সূচনা হয়। এই যুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রায় ২৪০০ মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে।