রাখাইন সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে মিয়ানমার

রাখাইনে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে সীমান্ত বেড়ার কাছাকাছি চলে আসছে এমন তথ্য পাওয়ার দাবি করে ওই অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করেছে মিয়ানমার। পুলিশ ও সেনা সদস্যদের একটি যৌথদল রাখাইনজুড়ে টহল দিচ্ছে বলে খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইলেভেন মিয়ানমার।

39220760_753009371757308_4663693042975244288_n

দীর্ঘদিন ধরে রাখাইনে বসবাস করার পরেও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষায় সশস্ত্র আন্দোলন করা সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) সদস্যদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে থাকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে পশ্চিম মিয়ানমারের অন্তত ৩০টি পুলিশ চেকপোস্টে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ জন সদস্য ও ৫৯ হামলাকারী নিহত হয় বলে দাবি করে থাকে মিয়ানমার। এসব হামলার জন্য আরসাকে দায়ী করে মিয়ানমার।

ওই হামলার জবাবে নিরাপত্তা অভিযানের নামে রাখাইনে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশ। অভিযানের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক। তারা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তোলে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন ওই অভিযানকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ আখ্যা দেয়। ওই অভিযান নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে থাকার একবছর পর আবারও ওই এলাকায় নিরাপত্তা টহল জোরালো করলো মিয়ানমার।

ইলেভেন মিয়ানমার জানিয়েছে, গত ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ জড়ো হওয়ার খবরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা রাজ্যের রাজধানীতে যৌথ টহল দেয়। দুই বাহিনীর প্রায় তিনশো সদস্য ২০টির বেশি যানবাহন ব্যবহার করে এই টহলে।

এই টহল সম্পর্কে রাখাইন রাজ্য পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, আমরা খবর পেয়েছিলাম সন্ত্রাসীরা সামরিক প্রশিক্ষণ ও মহড়া দিচ্ছে আর সীমান্ত বেড়ার কাছাকাছি তারা অবস্থান করছে। আমাদের পাওয়া এই তথ্য এখনও কার্যকর এবং এ নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে আগামী ২২ আগস্ট ঈদ উৎসব পালিত হবে। গুজব রয়েছে ওইদিন কিছু ঘটতে পারে। পাশাপাশি আরসা সদস্যদের ৩০টি পুলিশ পোস্টে হামলা চালানোর প্রথম বার্ষিকী আগামী ২৫ আগস্ট । ওই দিন ঘিরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হতে পারে। এসব কারণে আমরা ওই এলাকায় যৌথ টহল চালাচ্ছি। জনগণের নিরাপত্তা বিধানেও আমরা টহল দিচ্ছি। এসব কারণে আমরা বুথিডাউং ও মংডু শহরতলীর সীমান্ত এলাকাতেও টহল দিচ্ছি।

রাখাইন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ পর্যায় থেকে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত পাওয়ার সুবিধার্থে এই টহলে উচ্চ পদস্থ এক সামরিক কর্মকর্তা ও পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা রয়েছেন।

ইলেভেন মিয়ানমার জানিয়েছে, মংডু শহরতলীর উত্তরাঞ্চলীয় এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষেরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।