কাশ্মিরে হামলার ঘটনায় মুখ খুললো পাকিস্তান

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে জঙ্গি হামলায় ৪৪ জওয়ান নিহতের ঘটনায় একদিন পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। ভারতের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইসলামাবাদ বলেছে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও সরকার কোনও প্রমাণ ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে। প্রতিক্রিয়ায় হামলার ঘটনাটি বড় ধরনের উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে দেশটি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এখবর জানিয়েছে।

_105660748_98e3dc2f-bd18-444c-a115-7aadf70c5389

বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর প্রায় ২৫০০ সদস্যকে নিয়ে ৭০টি গাড়ির একটি বহর জম্মু থেকে কাশ্মির যাচ্ছিলো। এরমধ্যে ৪৪ জন জওয়ানকে বহনকারী একটি বাসের ওপর আত্মঘাতী হামলা চালায় জয়েশ-ই-মোহাম্মদ সদস্যরা। প্রায় সাড়ে তিনশ’ কেজি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি নিয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেওয়া হয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি জওয়ান নিহত হয়। আহত হয় আরও অনেকে। হামলার পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-এ-মোহাম্মদ। গোষ্ঠীটি কাশ্মিরে ভারতীয় শাসনের অবসান চায়। মতাদর্শগতভাবে কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে অবস্থান তাদের।

স্বাধীনতার কাশ্মিরে সবচেয়ে ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মোদি সরকারের জরুরি বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে পুরোপুরি একঘরে করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে দিল্লি। পাকিস্তানকে ভারতের দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে হামলাটির নিন্দা জানানো হয়েছে। তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও সরকারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে দেশটি।

ইসলামাবাদ সবসময় সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোনও রকম তদন্ত ছাড়াই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও সরকার হামলায় পাকিস্তানকে জড়ানোর যে কোনও পরোক্ষ ইঙ্গিতকে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করবে পাকিস্তান।

এক টুইটে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, কাশ্মির উপত্যকায় যে কোনও অতিরিক্ত সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা আমরা সব সময় জানিয়েছি।

এর আগে কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর ওপর বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছিল ২০০২ সালে। ওই সময় জম্মুর কাছে কালুচাক সেনাঘাঁটিতে হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছিলেন। নিহতদের বেশিরভাগ ছিলেন বেসামরিক ও সেনাদের আত্মীয়। এছাড়া ২০১৬ সালে উরিতে একটি সেনা ঘাঁটিতে জঙ্গিরা হামলা চালালে ১৭ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছিলেন। হামলাগুলোর জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে। তবে পাকিস্তান এসব হামলায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে আসছে। বৃহস্পতিবারের হামলায় পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যকার উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।