চীনবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার হংকংয়ের তরুণদের

বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল ও চীনের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন হংকংয়ের তরুণরা। বিক্ষোভের মুখে বিলটি স্থগিত করে দেশটির নেতা ক্ষমা চাইলেও বিক্ষোভকারীরা তা একেবারে বাতিল ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

5725

এই বিতর্কিত আইনের ফলে হংকংয়ের যে কোনও ব্যক্তি চীনের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে। গত সপ্তাহে কয়েক হাজার তরুণ রাজপথে নেমে আসলে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে পড়ে দেশটি। বিক্ষোভকারীরা দেশটির পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। এ সময় পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে।

হংকং এক সময় ছিল চীনের কাছ থেকে লিজ নেয়া ব্রিটিশ উপনিবেশ - যা ১৯৯৭ সালে আবার চীনের হাতে ফিরিয়ে দেয় ব্রিটেন। তখন একটা চুক্তি হয়েছিল যে 'এক দেশ দুই পদ্ধতি' ভিত্তিতে হংকং শাসিত হবে এবং স্বায়ত্বশাসনের গ্যারান্টি থাকবে। সেই হস্তান্তরের বার্ষিকীতে হাজার হাজার মানুষ গণতন্ত্রের দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেয়।

বিক্ষোভকারীরা এখন দাবি করছেন, সরকার যেনও বিলটি সম্পূর্ণ বাতিল করে এবং বিক্ষোভের সময় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তি। এছাড়া শান্তিপূর্ণ জমায়েতের পুলিশের শক্তি প্রয়োগের ঘটনার স্বাধীন তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা কোন চেষ্টা বাদ রেখেছি? আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি এবং চেষ্টা করেছি পার্লামেন্ট ভবন দখল করতে। কয়েকজন তো মৃত্যুর মুখে লাফিয়ে পড়েছে। এরচেয়ে বিপ্লবী আর কী হতে পারে?

দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের বার্তা একেবারে স্পষ্ট। তারা সহসাই সহিংসতায় পা দেবে না। কিন্তু যদি রাজনৈতিক দাবি মেনে না নিলে কঠোর পদক্ষেপের সম্ভাবনা একেবারে বাতিল করছে না তারা।

অপর এক বিক্ষোভকারীর কথায়, সহজে দাবি আদায় হবে না, জনগণকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। যখন আমরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করি তখন সেটার কোনও সীমানা থাকে না। আমাদেরও কোনও সীমা নেই।

হংকং-এর পার্লামেন্ট ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন। বিক্ষোভকারীদের  আচরণকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়েছে বেইজিং। চীন সরকারের হংকং বিষয়ক দূত এক বিবৃতিতে বলেন, এই ঘটনা মারাত্মক বেআইনি কর্মকাণ্ড এবং আইনের শাসনের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়তে কিছু উগ্রপন্থী অতিরিক্ত সহিংসতা ব্যবহার করেছে। আর বড় আকারের ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে। এটা বিস্ময়কর, মর্মান্তিক আর ক্ষোভ সৃষ্টিকর। এই ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ড হংকং-এর আইনের শাসনের ওপর চরম চ্যালেঞ্জ এবং হংকং-এর শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি মারাত্মক অবজ্ঞা। যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।