যুদ্ধে জড়ালো আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান, ভয়াবহ সংঘর্ষ

বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখ এলাকা নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। সীমান্তে সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে ব্যাপক হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, সংঘর্ষের সময় আজারবাইজানের কয়েকটি হেলিকপ্টার ও ট্যাংক বিধ্বস্ত হয়েছে। উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

AP_20271311650326-1

আর্মেনিয়া জানিয়েছে, আজারবাইজানের পক্ষ থেকে আকাশ পথে ও কামান নিয়ে হামলা চালানো হয়। এরপর তারা মার্শাল ল জারি করে সেনাবাহিনীকে সীমান্তে পাঠানা হয়। আজারবাইজান বলছে, হামলার শিকার হওয়ার পর তারা পাল্টা হামলা চালাচ্ছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উভয় দেশকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে। ১৯৯১ সালে ভেঙে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান।

নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলছে। অঞ্চলটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের বলে স্বীকৃত কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করে আর্মেনিয়ান জাতিগোষ্ঠী। দুই দেশের মধ্যকার সংঘাত গত কয়েক মাস ধরে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জুলাইতে আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সীমান্তে ব্যাপক সংঘাত হয়। এতে উভয়পক্ষের ১৭ সেনা নিহত হন।

এক বিবৃতিতে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, রবিবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে হামলা চালায় আজারবাইজান। এর জবাবে আর্মেনিয়ার বাহিনী প্রতিপক্ষের দুটি হেলিকপ্টার, তিনটি ড্রোন ভূপাতিত ও তিনটি ট্যাংক ধ্বংস করেছে।

তিনি আরও বলেন, আর্মেনিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে তারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে। এ সময় তারা ট্যাংক, আর্টিলারি মিসাইল, যুদ্ধবিমান এবং ড্রোন ব্যবহার করেছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজারবাইজানের হেলিকপ্টার ভূপাতিত করা হলেও ক্রুরা জীবিত আছেন।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র হিকমেত হাজিয়েভ এক বিবৃতিতে বলেন, হতাহতদের মধ্যে সাধারণ মানুষ এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোও জানিয়েছে, ওই অঞ্চলে সাধারণ মানুষ হতাহত হয়েছে।

আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বিবৃতিতে জানান, নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়ার এক নারী এবং এক শিশু নিহত হয়েছে।

বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলটির কর্তৃপক্ষ যুদ্ধের ঘোষণা পর আর্মেনিয়া সরকারও মার্শাল জারি করেছে এবং সেনাদের প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এক বিবৃতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, আমাদের পবিত্র মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য প্রস্তুত হোন।