ভারতে জোরালো হচ্ছে বিক্ষোভ, দিনব্যাপী অনশনে কৃষকরা

নতুন পাস হওয়া কৃষি আইন বাতিলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে চাপে ফেলতে সোমবার দিনব্যাপী অনশন কর্মসূচি পালন করছেন দেশটির বিক্ষোভরত কৃষকরা। টানা বিক্ষোভের ১৯তম দিন সোমবার সকাল ৮টা থেকে কয়েক লাখ কৃষক ভারতজুড়ে এই অনশন শুরু করেন এবং বিকাল ৫টায় তা শেষ হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।

1607933304_2020_12img14_dec_2020_pti14-12-2020_000040b

ভারত সরকার সম্প্রতি কৃষি আইনে বদল করে করপোরেট চাষ ও কৃষকদের কাছ থেকে যত খুশি ফসল কেনার অনমুতি দিয়েছে। করপোরেশনগুলি কৃষকদের আগাম টাকা দিয়ে কী চাষ করতে হবে সেটাও বলে দিতে পারবে। কৃষকদের ধারণা, এর ফলে তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। তারা শেষ পর্যন্ত করপোরেশনের দাসে পরিণত হবেন। সুবিধা হবে বড় সংস্থাগুলির। কয়েক বছরের মধ্যে কৃষিতে তাদের একচেটিয়া বাজার প্রতিষ্ঠা হবে। নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে দিল্লি ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছে দেশটির লাখ লাখ কৃষক। আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে সমঝোতা করতে সরকারের একাধিক বৈঠক হলেও কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি।

দর্শন পাল নামের এক কৃষক নেতা বলেন, আজ আমরা ভারতের সব জেলায় বিক্ষোভের ডাক দিয়েছি। বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের অংশ হিসেবে অনশন পালন করবেন। সরকার যদি আবার আলোচনায় বসার আহ্বান জানায় তাহলে তারা ইতিবাচকভাবেই বিবেচনা করবেন।

গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ভারতজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিলেন কৃষকরা। এর আগে জেলা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল।

কৃষকরা রাজধানী দিল্লির প্রবেশ পথ অবরোধ করার মধ্য দিয়ে টানা বিক্ষোভের সূচনা হয়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল সোমবার অনশন কর্মসূচি পালন করে কৃষকদের প্রতি সমর্থনের হাত বাড়িয়েছেন। নিজ দলের সমর্থকদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ভারতের ২ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির প্রায় ১৫ শতাংশ আসে কৃষিখাত থেকে। দেশটির ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়। তবে এই খাত সংকটে রয়েছে। গত কয়েক বছরে কৃষকরা ঋণে জর্জরিত হয়ে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছেন।  আর করোনাভাইরাস মহামারিতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এর মধ্যেই সেপ্টেম্বরে নতুন তিনটি কৃষি আইন পাস করে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার।