অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নিয়ে জাতিসংঘের আশঙ্কা

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে বসবাসরত প্রায় ৬লাখ রোহিঙ্গাদের নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছ জাতিসংঘ। সোমবার এক জাতিসংঘ মুখপাত্র এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, দেশটির সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসতে যাচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।

সোমবার সকালে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যুত্থানের খবর নিশ্চিত করে সেনাবাহিনী।

২০১৭ সালে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানে নিপীড়নের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এখনও তারা রোহিঙ্গা শিবিরে বাস করছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস ও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার অভিযোগ এনেছে, যা তারা অস্বীকার করে আসছে।

জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টেফানে দুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, রাখাইনে এখনও প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এদের মধ্যে ক্যাম্পে বন্দি থাকা ১ লাখ ২০ হাজার রয়েছে। তারা মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারে না এবং মৌলিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সুযোগ একেবারে সীমিত।

তিনি আরও বলেন, তাই আমাদের আশঙ্কা অভ্যুত্থানে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

 কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরিকল্পনা করছে। ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য পরিষদের সভাপতি ও ব্রিটেনের দূত বারবারা উডওয়ার্ড বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদি হুমকি নিয়ে আলোচনা করতে চাই। অবশ্যই আমরা মিয়ানমারের এশিয়া ও আসিয়ান প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।

রাশিয়ার সমর্থনে চীন ২০১৭ সালের সামরিক অভিযান নিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ আটকে দেয়। চীন ও রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য, তাদের ভেটো প্রদানের ক্ষমতা রয়েছে।  

জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা মিশন সোমবার জানান, মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক থেকে মিয়ানমারের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে জানা যাবে।

চীনা মিশনের এক মুখপাত্র বলেন, আমরা আশা করি নিরাপত্তা পরিষদের যে কোনও উদ্যোগ দেশটির পরিস্থিতিকে আরও জটিল করার চেয়ে স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক হবে।

দুজারিক জানিয়েছেন, জাতিসংঘ সব বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন স্ক্র্যানার বার্গেনার সক্রিয় রয়েছেন এবং নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ব্রিফ করবেন।