মিয়ানমারের অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জাপানে স্মরণকালের বৃহৎ বিক্ষোভ

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে জাপানের রাজপথে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে কয়েক হাজার মানুষ। রবিবার রাজধানী এ টোকিওতে আয়োজিত এ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অনেকের হাতেই ছিল বার্মার ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চি। আয়োজকরা বলছেন, এটি ছিল জাপানে এখন পর্যন্ত এ ধরনের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। রয়টার্সও এটিকে টোকিওতে স্মরণকালের বৃহৎ বিক্ষোভ হিসেবে উল্লেখ করা করেছে।

আয়োজকদের দাবি, এদিনের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে চার হাজারেরও বেশি মানুষ। আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন পোস্টারে লেখা ছিল, মিয়ানমারকে বাঁচাতে আমাদের সাহায্য কর, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বন্ধ কর।

টোকিও পুলিশ জানিয়েছে, এদিনের কর্মসূচিতে কত সংখ্যক মানুষ অংশ নিয়েছে, সে ব্যাপারে তারা কোনও মন্তব্য করবে না।

জাপানে কর্মরত ৪৫ বছরের বর্মি নাগরিক ঠাও জাও হান্টুন জানান, তিনিও মিয়ানমারে গিয়ে সেখানকার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিতে চান। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ফলে তিনি সেটি পারছেন না। ফলে রবিবার টোকিওর বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন তিনি।

জাপানে একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২৭ বছরের বর্মি নাগরিক থু থু তুন বলেন, মিয়ানমারের একজন নাগরিক হিসেবে আমি এই সামরিক অভ্যুত্থান গ্রহণ করতে পারছি না। আমার মনে হয়, জাপানে বসবাসরত মিয়ানমারের অন্য সবার মতামতও একই রকম।

এদিকে মিয়ানমারে অভ্যন্তরে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে চলমান ধরপাকড় অভিযান আরও জোরালো করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এর অংশ হিসেবে নতুন একটি আইন প্রণয়ন করেছে তারা। এর আ্ওতায় এখন থেকে কারও বাড়িতে রাত্রিকালীন কোনও অতিথি অবস্থান করলে তা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সেনাবাহিনী পরিচালিত ফেসবুক পেজে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মিয়ানমারে ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। রাজপথে নেমে আসছে হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভ দমনে পুলিশও কঠোর হয়ে উঠতে শুরু করেছে। সেনা অভ্যুত্থানের দিনেই নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিসহ উর্ধ্বতন নেতাদের গ্রেফতারের পর বহু বিক্ষোভকারীকেও আটক করা হচ্ছে। তবে তাতেও দমানো যাচ্ছে না বিক্ষোভ। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ছড়িয়ে পড়ছে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ। বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বর্মি নাগরিকরা এসব কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে।