বাহিনী ছেড়ে সশস্ত্র প্রতিরোধে যোগ দিচ্ছেন মিয়ানমারের সেনা সদস্যরা

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রায় আটশ’ সেনা সদস্য বাহিনী ছেড়ে নাগরিক অসহযোগ আন্দোলনে (সিভিল ডিজঅবিডিয়েন্ট মুভমেন্ট-সিডিএম) যোগ দিয়েছেন। সরকারি বাহিনীর পক্ষ ত্যাগ করা সাবেক এক ক্যাপ্টেন এ তথ্য জানিয়েছেন। সেনা সদস্যদের পক্ষ ত্যাগে সহায়তা দিচ্ছেন লিন হেটেট অং (২৯) নামের এই সাবেক কর্মকর্তা। তিনি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৫২৮তম ইনফান্ট্রি ব্যাটালিয়নের হয়ে শান প্রদেশের ট্রায়াঙ্গল রিজিওন কমান্ডে কাজ করেছেন। দেশটির সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে গত ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাজপথে জোরালো প্রতিবাদ গড়ে উঠলে প্রাণঘাতী বল প্রয়োগ করে সেনা সরকার। দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আট শতাধিক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। রাজপথে বিক্ষোভ খানিক প্রশমিত হয়ে এলেও সেনা সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির বহু গোষ্ঠী।

সেনা সরকারের চাকরি ছেড়ে দিয়ে নাগরিক অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন বহু পেশাজীবী। এ তালিকায় চিকিৎসক, শিক্ষক ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও রয়েছেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই তালিকায় ক্রমেই বেশি মানুষ যুক্ত হচ্ছেন।

সেনাবাহিনীর পক্ষত্যাগী সাবেক ক্যাপ্টেন লিন হেটেট অং জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী ছেড়ে দেওয়া প্রায় আটশ’ সদস্যের এক-তৃতীয়াংশ পিপল’স ডিফেন্স ফোর্সে (পিডিএফ) যোগ দিতে প্রস্তুত। বাকিরা সেনা শাসন উৎখাতের বিপ্লবে অন্য কোনও উপায়ে যোগ দেবেন কিন্তু তারা যুদ্ধ করতে চান না। উল্লেখ্য, মিয়ানমারে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া আইনপ্রণেতারা একটি জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করেছেন। ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামের এই সরকারের সশস্ত্র শাখা হলো পিডিএফ।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ছেড়ে যাওয়া প্রায় একশ’ সদস্য বাহিনীতে মেজর, ক্যাপ্টেন ও লেফটেন্যান্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। পক্ষ ত্যাগ করা অনেক সদস্য নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত এলাকায় গিয়ে সেখানকার মানুষদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরাই বেশি পক্ষ ত্যাগ করছেন। পদাতিক সেনা হিসেবে কাজ করা সেনাদের পক্ষ ত্যাগ করা বেশি কঠিন হয়ে উঠেছে। কেননা, তারা পালিয়ে গেলে পরিবারের সদস্যরা নিপীড়নের শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। সাবেক ক্যাপ্টেন লিন হেটেট অং বলেন, ‘তাদের পালাতে না পারার মূল কারণ হলো তারা সম্মুখ সারিতে কাজ করছেন। তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন।’