মিয়ানমারে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে নিহত ২৭ সেনা

মিয়ানমারের চিন রাজ্যে প্রতিরোধ যোদ্ধারা ফাঁদ পেতে দেশটির ২৭ জন সরকারি সেনাকে হত্যা করেছে। নিহত সেনাদের মধ্যে ক্যাপ্টেন পদ মর্যাদার এক কর্মকর্তাও রয়েছেন। বৃহস্পতিবার থান্তলাং ও হাখা এলাকায় এই হামলা হয়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ এখবর জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ)-এর এক মুখপাত্র জানান,  খুয়ালরিং পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৩০ জন সেনা সদস্যকে ফাঁদে ফেলে। এক ঘণ্টার মধ্যে ১৭ সেনা নিহত হয়।

মুখপাত্র আরও বলেন, সেনারা এবার মোটরসাইকেলে আসে। আমরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের ফাঁদে ফেলি।

ওই দিনই সিডিএফ ৫০ সেনার একটি কলামে হামলা চালায়। হাখা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে গাঙ্গাউ-হাখা মহাসড়কে এই হামলা চালানো হয়। এতে ১০ সেনা নিহত হয়, বাকিরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।

সিডিএফ জানায়, সরকারি সেনারা বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষে আরপিজি ও মেশিন গান ব্যবহার করে। কিন্তু তাদের কোনও যোদ্ধা আহত হয়নি। সিডিএফের যোদ্ধারা দেশীয় রাইফেল ও হালকা অস্ত্র নিয়ে সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করছে।

প্রতিরোধ বাহিনীর মুখপাত্র জানান, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অপরাধের প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

তিনি বলেন, তারা আমাদের গৃহপালিত পশু ছিনিয়ে নিচ্ছে, অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে তারা আবাসিক এলাকা গোলাবর্ষণ করছে যাতে মানুষ নিজেদের বাড়িতে থাকতে ভয় পায়।

এপ্রিলের শুরুতে সিডিএফ গঠিত হয়। মূলত চিন রাজ্যের চিন জাতিগোষ্ঠীর উদ্যোগে এটি গঠিত হয়। তবে এতে অন্যান্য রাজ্যের মানুষও যোগ দিয়েছেন।

খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের পর কয়েকশ’ মানুষ জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে গত ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাজপথে জোরালো প্রতিবাদ গড়ে উঠলে প্রাণঘাতী বল প্রয়োগ করে সেনা সরকার। দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আট শতাধিক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। রাজপথে বিক্ষোভ খানিক প্রশমিত হয়ে এলেও সেনা সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির বহু গোষ্ঠী।