আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে: হামিদ কারজাই

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। রবিবার সংবাদমাধ্যম এপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

হামিদ কারজাই বলেন, ‌‘চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই’ এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের দুই দশকের মিশন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।

তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতা অনুযায়ী, এরইমধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মার্কিন সেনা কাবুল ছেড়েছে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি শতভাগ সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন। তবে বিদেশি সেনারা চলে যাওয়ার পর আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আফগান সংকটের কোনও ধরনের রাজনৈতিক সমাধান বা শান্তি চুক্তি না হলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রতিবেশী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এমন পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যম এপি-কে এই সাক্ষাৎকার দেন হামিদ কারজাই। তিন বলেন, একটি দুর্যোগ পেছনে রেখে বিদেশি সেনারা আফগানিস্তান ছাড়ছে।

হামিদ কারজাই বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ২০ বছর আগে চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই এবং স্থিতিশীলতা ফেরানোর সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে এসেছিল। তবে উগ্রবাদ এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। সুতরাং তারা ব্যর্থ হয়েছে।’

সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট বলেন, আফগানিস্তানের নাগরিক হিসেবে আমরা আমাদের যাবতীয় ব্যর্থতা স্বীকার করি। তবে সেই একই উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসা বৃহৎ শক্তিগুলোর কী হবে? তারা এখন আমাদের ছেড়ে কোথায় যাচ্ছে? এটি সম্পূর্ণ অসম্মান ও বিপর্যয়।’

মার্কিন আগ্রাসনের পর ১৩ বছর দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন হামিদ কারজাই। যদিও তালেবানের কাছে তিনি ছিলেন আমেরিকার পুতুল মাত্র। অন্যদিকে এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তার সম্পর্ক উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে যায়। রবিবার এপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, সবকিছুর পরও তিনি চান বিদেশি বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে যাক।

তিনি বলেন, আফগানরা শান্তি প্রতিষ্ঠার এক অপ্রতিরোধ্য আকাঙ্ক্ষার পেছনে ঐক্যবদ্ধ ছিল। নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য এখন তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। বিদেশি সামরিক উপস্থিতি ছাড়াই আফগানিস্তান আরও ভালো থাকতে পারে।

সাবেক এই আফগান প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি মনে করি আমাদের নিজের দেশকে আমাদেরই রক্ষা করা উচিত। নিজেদের জীবন বাঁচানো উচিত। তাদের উপস্থিতি আমাদেরকে আজকের এই পরিস্থিতিতে নিয়ে এসেছে। আমরা যে দুর্দশা ও ক্রোধের মুখোমুখি হয়েছি তা চালিয়ে যেতে চাই না। আফগানিস্তানের জন্য তারা চলে যাওয়াই ভালো।