জুডো ক্লাসে ২৭ বার আছাড়, শিশুর মৃত্যু

তাইওয়ানে ক্লাসে জুডো অনুশীলনের সময় ২৭ বার মাটিতে আছাড় দেওয়া সাত বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত এপ্রিলে ওই ঘটনার পর মস্তিষ্কে মারাত্মক রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হয় শিশুটি। ক্লাসে তার দুই সহপাঠি ও প্রশিক্ষক অনুশীলনের সময় এই কাণ্ড ঘটালে কোমায় চলে যায়। তাকে রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রায় ৭০ দিনের মাথায় লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তার বাবা-বা। তবে শিশুটির নাম প্রকাশ করা হয়নি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম তাইপে টাইমস জানিয়েছে, ৬০এর কোঠায় থাকা শিশুটির প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে শারিরীক আঘাত দিয়ে মারাত্মক আহত করা এবং অপরাধ ঘটাতে শিশুকে ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রশিক্ষকের কেবলমাত্র ডাকনাম প্রকাশ করা হয়েছে। হো নামের এই প্রশিক্ষক এই মাসের শুরুতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ডলারের বিনিময়ে জামিন পেয়েছেন।

শিশুটির মৃত্যুর পর এখন ওই প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগও আনা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডন হতে পারে তার।

গত ২১ এপ্রিল এক চাচার তত্ত্বাবধানে জুডো ক্লাসে যায় শিশুটি। জুডোর জন্য শিশুটির বয়স উপযুক্ত নয় তা শিশুটির মাকে বোঝাতে ক্লাসের ভিডিও করেন ওই চাচা। ভিডিওতে দেখা যায়, বয়সে বড় এক এক সহপাঠি শিশুটিকে অনুশীলনের সময় আছাড় মারছে। তাকে চিৎকার করতে দেখা গেলেও প্রশিক্ষক তাকে উঠে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয় আর বড় শিশুটি তাকে আছাড় মারতে থাকে। পরে ওই প্রশিক্ষকও অনুশীলনের সময় একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেন। পরে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরিবারের অভিযোগ অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরও প্রশিক্ষক শিশুটি অজ্ঞান হওয়ার ভান করছে বলে অভিযোগ করেন।

তবে ওই চাচা কেন প্রশিক্ষককে থামাননি এমন প্রশ্নও সামনে এসেছে। তবে তাইওয়ানের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেখানে দীর্ঘকাল থেকেই শিক্ষককে সম্মান দেখানোর রেওয়াজ আছে। ফলে কোনও কোনও সময় যেকোনও পরিস্থিতিতেই তাদের কর্তৃত্ব মেনে নিতে হয়।

শিশুটির মা পরে সাংবাদিকদের জানান, যা ঘটেছে তার জন্য অসহায় বোধ করেছেন ওই চাচা। পরে জানা যায় ওই প্রশিক্ষকের কোনও লাইসেন্সই ছিলো না।

মঙ্গলবার ফেঙ্গুয়ান হাসপাতালের এক ঘোষণায় জানানো হয় হঠাৎ করে শিশুটির ব্লাড প্রেশার এবং হার্ট রেট দ্রুত কমতে থাকে। পরে চিকিৎসকেরা পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তারা লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নিতে সম্মতি দেন।