মিয়ানমারে গণহত্যা চলছে, জাতিসংঘকে সতর্ক করলেন রাষ্ট্রদূত

জান্তা সরকার মিয়ানমারে গণহত্যা চালাচ্ছে উল্লেখ করে জাতিসংঘকে সতর্ক করেছেন সংস্থাটিতে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত কিওয়া মোয়ে তুন। এক চিঠিতে তিনি বলেন, অবৈধ সরকার দেশটিতে গণহত্যা মেতে ওঠেছে। জান্তা তাকে রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে বহিষ্কার করলেও দায়িত্ব থেকে সরে যেতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর ৬ মাস পার করলো মিয়ানমারের জান্তা সরকার। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়লেও ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ। এই সরকারের বিরুদ্ধে এবার নিজেই গুরুতর অভিযোগ এনেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত।

সংস্থাটির মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসকে এক চিঠিতে জানান, গত জুলাইয়ে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাগাইং রাজ্যের কানি শহরে ৪০ জনের লাশ পাওয়া গেছে। আর এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে জান্তা সরকারের হাত রয়েছে বলে নালিশ করেছেন তিনি। বুধবার ফরাসি নিউজ এজেন্সি এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য এসেছে।

সামরিক বাহিনী ও সাধারণ মানুষের সংঘর্ষ

যদিও মিয়ানমারের জেনারেলরা এমন অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। তবে এএফপি বলছে, সাগাইং অঞ্চলে জান্তা সরকার মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় তারা স্বাধীনভাবে প্রতিবেদনগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারছে না।

গুতেরেসকে লেখা চিঠিতে মোয়ে তুন অভিযোগ করেন, সেখানকার একটি গ্রামে সৈন্যদের অমানবিক নির্যাতনে গত ৯ থেকে ১০ জুলাইয়ে তাদের মৃত্যু হয়। এরপরই ওই এলাকা থেকে ১০ হাজার নাগরিক পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

চিঠিতে তিনিও আরও জানান, গত ২৬ জুলাই কানিতে স্থানীয় যোদ্ধা ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের পর আরও ১৩ জনের মরদেহ পাওয়া যায়। আর ২৮ জুলাই কানির কটি গ্রামে শিশুসহ ১১ জনকে হত্যা করে সেনারা। শুধু তাই নয়, গ্রামটিতে আগুন ধরিয়ে দিলে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দেয়।

এমন পরিস্থিতি বর্ণনা দিয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান এই রাষ্ট্রদূত। নৃশংস পরিস্থিতি মিয়ানমারে চলতে দেওয়া যায় না বলেও উদ্বেগ জানান তিনি। এই সংকটে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে মানবিক সহায়তার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

গত ১ ফেব্রয়ারি মিয়ানমারের সু চি সরকারকে অবৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখলে নেয় জান্তা সরকার। এই সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে দেশটির নাগরিকরা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত হাজারো মানুষ নিহত হয়েছেন।