ফুরিয়ে যাচ্ছে অর্থ, বিদেশে আটকা পড়ছেন শত শত আফগান কূটনীতিক

তালেবান আকস্মিকভাবে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় বিপদে পড়েছেন শত শত আফগান কূটনীতিক। দূতাবাস সচল রাখার অর্থও যেমন ফুরিয়ে যাচ্ছে তেমনি পরিবারের কাছে ফিরতে পারার আশঙ্কাও রয়েছে। অনেকেই বিদেশে শরণার্থী হিসেবে থেকে যাওয়ার আবেদন করেছেন। তবে তালেবান কর্তৃপক্ষ সব দূতাবাসে চিঠি দিয়ে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আটটি দূতাবাসের কর্মীরা নিজ নিজ দূতাবাসের স্থবিরতা এবং কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন। এর মধ্যে কানাডা, জার্মানি ও জাপানের আফগান দূতাবাসের কর্মীরাও রয়েছেন।

বার্লিনের এক দূতাবাস কর্মী বলেন, এখানে আমার সহকর্মী এবং আরও বহু দেশের কর্মীরা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে তাদের গ্রহণ করার আবেদন করেছেন। তবে তিনি এখনও আবেদন করেননি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, এখনও কাবুলে থেকে যাওয়া স্ত্রী ও চার মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।

ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি আক্ষরিকভাবেই ভিক্ষা চাইছি, আমাকে কূটনীতিক থেকে শরণার্থী করে দিন।’ কাবুলের একটি বাড়িসহ তার কাছে থাকা সবকিছুই বিক্রি করে দিতে পারেন বলেও জানান তিনি।

গত মঙ্গলবার কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেন, সব আফগান দূতাবাসেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার বার্তা পাঠিয়েছে তালেবান। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান আপনাদের জন্য বিনিয়োগ করেছে, আপনারা আফগানিস্তানের সম্পদ।’

এক সিনিয়র আফগান কূটনীতিকের ধারণা বিশ্ব জুড়ে আফগান দূতাবাসে কর্মরত এবং সরাসরি তাদের ওপর নির্ভরশীল রয়েছে প্রায় তিন হাজার। গত ৮ সেপ্টেম্বর আশরাফ গণির উৎখাত হওয়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে দূতাবাসগুলোতে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়।

তবে এসব আহ্বানে মাঠ পর্যায়ের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি উত্তরণের কোনও নির্দেশনা নেই বলে মনে করেন আফগান দূতাবাস কর্মীরা। কানাডায় থাকা এক কর্মী বলেন, ‘অর্থ নেই। এই অবস্থায় কাজ চালানো সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে আমাকে বেতন দেওয়া হচ্ছে না।’

দিল্লির দুই দূতাবাস কর্মীও জানিয়েছেন কার্যক্রম চালানোর মতো অর্থ তাদের নেই। তারা বলছেন, আগের সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় তালেবানের হাতে নিপীড়নের শঙ্কায় দেশে ফিরবেন না তারা। ভারতেই শরণার্থী মর্যাদা পাওয়ার আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।