আফগান মেয়েদের স্কুল নিষিদ্ধ করা হবে অনৈসলামিক: ইমরান খান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, প্রতিবেশী আফগানিস্তানে মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণ থেকে বিরত রাখা হবে অনৈসলামিক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেছেন। মঙ্গলবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের স্বীকৃতি পেতে তালেবান সরকারকে যেসব শর্ত মানতে হবে সেগুলো তুলে ধরেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি তালেবান নেতাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইমরান খান আরও বলেছেন, আফগানিস্তানকে পাকিস্তানের নিরাপত্তায় হুমকি হতে পারে এমন সন্ত্রাসীদের আঁতুড়ঘর হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত হবে না।

শনিবার যখন দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল পুনরায় চালু হয়, তখন শুধু ছেলে শিক্ষার্থী ও পুরুষ শিক্ষকদের স্কুলে হাজির হতে বলা হয়েছে তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে। এসব শ্রেণিতে অধ্যয়নরত মেয়ে শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কিছু তারা বলেনি। ফলে মেয়েদের বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে, তাদের পরিবার উদ্বিগ্ন এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায়। 

ইমরান খান বিবিসি’র জন সিম্পসনকে বলেন, ক্ষমতায় আসার তারা যেসব বিবৃতি ও বক্তব্য দিয়েছে তা খুব উৎসাহব্যঞ্জক। আমি মনে করি তারা নারীদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেবে। নারীদের শিক্ষিত হতে না দেওয়ার ধারণাটি ইসলামি নয়। ধর্মের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।

১৯৯৬-২০০১ সালের শাসনামলে তালেবান নারী ও মেয়েদের স্কুলে পড়া নিষিদ্ধ করেছিল। আগস্টে ক্ষমতা দখলের পরই তালেবান স্পষ্ট করেছে, গত ২০ বছর ধরে নারীরা শিক্ষাগত যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার পেয়ে আসছিলেন সেগুলোর বিষয়ে গুরুতর কঠোরতা আরোপ করা হবে।

স্বীকৃতি পাওয়ার মতো সব শর্ত পূরণ করতে পেরেছে কিনা জানতে চাইলে ইমরান খান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তালেবানকে আরও সময় দেওয়ার আহ্বান জানান। তার কথায়, কিছু বলার মতো সময় এখনও আসেনি।

তিনি প্রত্যাশা করছেন, আফগান নারীরা শেষ পর্যন্ত অধিকার ফিরে পাবেন।

পাকিস্তান প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে মিলিতভাবে তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে উল্লেখ করেছেন ইমরান খান। তিনি বলেন, সব প্রতিবেশীর এক হওয়া এবং অগ্রগতি পর্যালোচনা করা উচিত। তাদের স্বীকৃতি দেওয়া বা না দেওয়া একটি যৌথ সিদ্ধান্ত হবে।

ইমরান খান তালেবানকে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এমনটি করতে ব্যর্থ হলে আফগানিস্তান গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।