৯৫ শতাংশ আফগান পরিবার ক্ষুধার্ত: ডব্লিউএফপি

কর্মহীনতার বৃদ্ধি, অর্থের অভাব আর মূল্য বৃদ্ধির কারণে আফগানিস্তানে নতুন শ্রেণীর ক্ষুধার্ত মানুষ তৈরি হচ্ছে। বুধবার জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, প্রথমবারের মতো গ্রাম অঞ্চলের মানুষের মতো একই হারে খাদ্য অনিশ্চয়তায় পড়ছেন শহরের মানুষেরাও।

ডব্লিউএফপি’র সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, আফগানিস্তানের মাত্র পাঁচ শতাংশ পরিবারে প্রতিদিন খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। এছাড়া অর্ধেক পরিবার জানিয়েছে, বিগত দুই সপ্তাহ আগে তাদের অন্তত এক বেলার খাবার বন্ধ হয়ে গেছে।

ডব্লিউএফপি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং প্রতিনিধি ম্যারি-এলেন ম্যাকগ্রোয়ার্থি বলেন, ‘গত তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের ভয়াবহ খরার মধ্যে আফগানিস্তানে অর্থনীতির অবাধ পতন আকস্মিক এবং নির্মম। এই ভয়াবহ সময়ে আফগান জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় আমরা সবকিছুই করছি।’

আফগানিস্তানের মধ্যবিত্ত শ্রেণীও খাবারের কষ্টে আছে। ডব্লিউএফপি বলছে, যেসব পরিবার প্রধানের অন্তত উচ্চ-মাধ্যমিত বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা রয়েছে তাদের মধ্যে মাত্র দশ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রতিদিন খাবার পর্যাপ্ত খাবার কিনতে পারছেন।

কম-শিক্ষিত পর্যায়ের মানুষের মধ্যে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। তবে ক্ষুধার এই বিস্তার অভূতপূর্ব। এর মধ্য দিয়ে সংকটের ভয়াবহতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

একজন রোজগারকারী সপ্তাহে গড়ে একদিন কাজ পাচ্ছেন। ফলে মূল্যবৃদ্ধির সময়ে তাদের পর্যাপ্ত খাবার কেনা সম্ভব হচ্ছে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০২০ সালের তুলনায় রান্নার তেলের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আবার গমের দাম বেড়েছে ২৮ শতাংশ।

ডব্লিউএফপি প্রতিনিধি ম্যারি-এলেন ম্যাকগ্রোয়ার্থি বলেন, ‘দুই পর্যায়ের জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার গতি বাড়িয়েছে ডব্লিউএফপি। প্রথমত, আমরা মারাত্মক ক্ষুধা এবং অপুষ্টি এড়াতে সবচেয়ে দুর্গত মানুষদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছি আর দ্বিতীয়ত আমরা স্থানীয় খাবার উৎপাদন এবং তা বাজারে নেওয়ার সক্ষমতা বাড়াচ্ছি। এছাড়া অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে আমরা স্বল্পমেয়াদি কাজের সুযোগ এবং পরিবারগুলোকে অর্থ পাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছি।’