কাজের বিনিময়ে গম কর্মসূচি চালু করলো তালেবান

আফগানিস্তানে রবিবার কাজের বিনিময়ে গম কর্মসূচি চালু করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার। ক্ষুধা ও বেকারত্ব মোকাবিলায় এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় হাজার হাজার মানুষকে কাজের বিনিময়ে গম সরবরাহ করা হবে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডন।

কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি নিয়ে কথা বলেছেন তালেবানের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ। তিনি জানান, আফগানিস্তানের প্রধান প্রধান শহর ও সংলগ্ন এলাকায় এই স্কিমটি চালু করা হবে। শুধু রাজধানী কাবুলেই ৪০ হাজার জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, বেকারত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শ্রমিকদের অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট প্রায় বিনা বাধায় কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। প্লেনভর্তি অর্থ নিয়ে পালিয়ে দেশ ছাড়েন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি। আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আজমল আহমদিও পালিয়ে যান। পরে এক টুইটে তিনি জানান, ‘তালেবানের ওপর একের পর এক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। বেশিরভাগ অর্থকড়ি দেশের বাইরে রাখা। সেগুলো তালেবানের হাতে পৌঁছানোর কোনও সম্ভাবনাও নেই।’

পরে যুক্তরাষ্ট্রে গচ্ছিত থাকা আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯০০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ জব্দ করার ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৭৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তালেবান ছাড়াও পাকিস্তান ও রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই অর্থ ছাড় করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে নিজ অবস্থানে অনড় হোয়াইট হাউজ। এদিকে দারিদ্র্য, খরা, বিদ্যুৎ সংকট আর অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন আফগানিস্তানের মানুষ।

এমন পরিস্থিতিতেই রবিবার শ্রমের বিনিময়ে গম কর্মসূচি চালুর ঘোষণা দেয় তালেবান। এর আওতায় শ্রমিকদের কাজের বিনিময়ে নগদ অর্থের বদলে গম সরবরাহ করা হবে।

বিশেষ করে বেকার এবং আসন্ন শীতে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে এই কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

দুই মাসের এই কর্মসূচিতে শুধু কাবুলেই ১১ হাজার ৬০০ টন গম সরবরাহ করা হবে। হেরাত, জালালাবাদ, কান্দাহার, মাজার-ই-শরিফ ও পোল-ই-খোমরিসহ দেশের অন্যান্য স্থানে আরও প্রায় ৫৫ হাজার টন গম সরবরাহ করা হবে।