আফগানদের দেশে ফিরতে বাধ্য করছে ইরান

ইরানে আশ্রয় নেওয়া আফগানদের দেশে ফিরতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন। গত মাসের শেষ সপ্তাহে ২৮ হাজারের বেশি আফগানকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে তেহরান।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-আইওএম বলছে, এ বছর ১০ লাখের বেশি আফগানকে ইরান থেকে দেশে পাঠানো হয়েছে। অক্টোবরের ২১ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যে ২৮ হাজার ১১৫ জন আফগান দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছে তারা।

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। প্লেনভর্তি অর্থ নিয়ে পালিয়ে দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রে জমা থাকা দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ তহবিল জব্দ করা হয়। রাশ পড়ে আন্তর্জাতিক সাহায্যেও। এমন বাস্তবতায় দেশটিতে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় আরও আফগান শরণার্থীকে দেশে ফেরার খবরে উদ্বেগ জানিয়েছে ত্রাণকর্মীরা।

জাতিসংঘে ইরানের দূত মজিদ তাখত গত মাসে বলেছিলেন, নতুন কোনও আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়াই তারা আফগান শরণার্থীদের দেখাশোনা করছেন। ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ভাহিদিও তার দেশে আর না যেতে আফগানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে তিনি ‘ধারণক্ষমতা সীমিত' বলে জানিয়েছিলেন।

ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশটির অর্থনীতি সংকটে রয়েছে। এই অবস্থায় আফগানদের দেখাশোনা করা তেহরানের জন্যও কঠিন হয়ে পড়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, ২০২০ সালে ইরান ৩৪ লাখের বেশি আফগানকে আশ্রয় দিয়েছে। এরমধ্যে শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় আট লাখ। এছাড়া ২০ লাখের বেশি আফগান অভিবাসী ছিল, যাদের তথ্য নথিভুক্ত করা নেই।  

ফরাসি একটি বার্তা সংস্থা ইরান-আফগানিস্তান সীমান্ত ও নিকটবর্তী হেরাত শহরে ইরান থেকে ফেরা ২০ আফগান নাগরিকের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা অভিযোগ করেছেন, যাদের দেশে ফেরার টাকা নেই তাদের বিভিন্ন কেন্দ্রে আটক করে রাখে ইরানি কর্তৃপক্ষ। অনেক সময় মারধর করা হয় বলেও তারা অভিযোগ করেছেন। এছাড়া আটক কেন্দ্রের খারাপ অবস্থার ছবি যেন কেউ তুলতে না পারে সেজন্য মোবাইলও নিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। তবে এসব অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোও এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চায়নি। সূত্র: ডিডব্লিউ।