আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে: জাতিসংঘ

আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক সংকটের ব্যাপারে ফের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা পতনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে আফগানিস্তান। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক সোমবার এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

স্টিফেন ডুজারিক বলেন, আফগানিস্তানের ক্রেডিট মার্কেটে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ২০২০ সালে যেখানে ছিল শতকরা ২০ ভাগ তা চলতি বছরে ৫৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, আফগান ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা তাদের পুঁজি তুলে ফেলছেন। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ব্যাংকে জনগণের গচ্ছিত অর্থ শতকরা ৪০ ভাগ কমে যাবে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের এই মুখপাত্র বলেন, এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের জন্য সাহায্যের আবেদনে যে সাড়া পাওয়া গেছে তাতে ৬০ কোটি ৬০ লাখ ডলারের তহবিল সংগৃহীত হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে দেশটির এক কোটি ১০ লাখ মানুষকে সেবার আওতায় আনা সম্ভব হবে।

আসন্ন শীতকালকে সামনে রেখে আফগানিস্তানে দারিদ্র ও বেকারত্ব ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। শীতকালে দেশটির কোনও কোনও এলাকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে চলে যায়। এ সময় বিশেষ করে দিনমজুরদের তেমন কোনও কাজ থাকে না। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

এদিকে জাতিসংঘ শিশু বিষয়ক তহবিল জানিয়েছে, আফগানিস্তানের ৩০ লাখের বেশি শিশু অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই করছে। কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এর মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি শিশু মৃত্যুর মুখে পড়বে।

২০ বছরের যুদ্ধে বাবাকে হারিয়েছে ১০ বছরের আব্দুল রহমান। পরিবারের সাত সদস্যের মধ্যে সে-ই একমাত্র উপার্জকারী। আব্দুল রহমান বলেন, ‘আমার বাবা যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। ভাইয়েরা কাজ করতে পারে না। আমিই কাজ করছি।’

নাগরিক অধিকারকর্মীরা বলছেন, আফগানিস্তানে জরুরি সহায়তা না দেওয়া হলে বিশেষ করে শিশুদের পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নেবে। এমন বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। সূত্র: পার্স টুডে, টোলো নিউজ।