মিয়ানমারে সেনাদের তাণ্ডব, পাঁচ শতাধিক বাড়ি-ঘরে আগুন

মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় দুটি গ্রামের পাঁচ শতাধিক বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে জান্তা বাহিনী। সোমবার সাগাইং অঞ্চলের একটি গ্রাম পুরোপুরি জ্বালিয়ে দেয় এবং অন্যটির অর্ধেক ধ্বংস করে দেওয়ার দাবি করে স্থানীয়রা। এর মধ্যে দিয়ে বেসামরিকদের ওপর সামরিক সরকারের দমন-পীড়নের নতুন চিত্র সামনে এলো।

জান্তা সরকারের এমন কাণ্ডে প্রাণ ভয়ে গ্রাম ছেড়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন হাজারো বাসিন্দা। এদিন মওয়ে টোন গ্রামকে টার্গেট করে সেনারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেখানকার এক বাসিন্দা বলেন, দুটি হেলিকপ্টারে করে অবতরণ করে প্রায় ১৫০ সেনা সদস্য। এরপরই শুরু হয় তাদের তাণ্ডব।

হঠাৎ অভিযানের কারণে ওই গ্রামের ২৫০টি বাড়ির বাসিন্দারা খাবারসহ প্রয়োজনীয় কিছু না নিয়েই পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাও-কে এমনটাই জানান ৪৮ বছর বয়সী বাসিন্দা।

'সেনাবাহিনীর আক্রমণের মধ্যেই আমরা অন্য দিকে চলে যেতে শুরু করি। তারা গ্রামে ঢুকেই গুলি চালাতে শুরু করে। আমরা আর পেছনে তাকানোর সাহস পাইনি, শুধু সামনের দিকেই দৌঁড়েছি'।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাধারণ কৃষক। তাদের (সেনা) সঙ্গে লড়াই করতে পারি না। কোনও কারণ ছাড়াই তারা আমাদের সব কিছু শেষ করে দিয়ে গেছে। আমরা তাদের কখনও ক্ষমা করবো না। আমাদের যেমন অনুভূতি হয়েছে তাদেরও এমনটা হোক আমরা চাই'।

ব্ল্যাক পিকক – একটি গেরিলা দল। জান্তাবিরোধী দলের এই সদস্য বলেন, মওয়ে গ্রাম থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের প্যান গ্রামেও হামলা চালায় জান্তারা। ওই গ্রামে আগুন দেওয়ায় পাঁচ শতাধিক ঘর-বাড়ি পুড়ে গেছে।

গ্রামবাসীর কাছে মুক্তিপণ দাবি করে বলেও জানান তিনি। যদিও এই সদস্যের এমন তথ্য স্বাধীনভাবে সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাও।

উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সু চি’র সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় বসে সামরিক বাহিনী। এর বিরোধিতায় সাধারণ মানুষ সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে তুললে দমন-পীড়ন শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র: দ্য ইরাবতী