শ্রীলঙ্কায় সরকারি দলের নেতাদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ

অর্থনৈতিক সঙ্কটে টালমাটাল শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি ক্রমেই আরও উত্তপ্ত হচ্ছে। তীব্র বিক্ষোভের মুখে সোমবার পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। তবে তাতেও ক্ষোভ কমেনি আন্দোলনকারীদের। দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি দলের নেতাদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের বাড়িঘরেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তারা। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের ঘোষণা বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে পারেনি। তারা মাহিন্দার ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগ দাবি করছে।

চলমান সংঘাতে সোমবার থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৯০ জনেরও বেশি মানুষ।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোমবারই দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়। পরে এর মেয়াদ বুধবার সকাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

সোমবার সরকার সমর্থকরা রাজধানী কলম্বোতে মাহিন্দা রাজাপাকসের টেম্পল ট্রিস বাসভবনের বাইরে এবং পরে গল ফেস গ্রিন-এ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সংঘাত এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও দাঙ্গা স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়। এক পর্যায়ে সরকার সমর্থকরা লাঠি ও খুঁটি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের দিকে তেড়ে গেলে তাদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও জলকামান নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

বিক্ষোভকারীরাও সরকার সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে পাল্টা জবাব দেয়। সংঘর্ষের মধ্যেই বিক্ষোভকারীরা একজন এমপির গাড়ি আটকে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণের পর এক পর্যায়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।

বিবিসি জানিয়েছে, রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে বিক্ষোভকারীরা রাজাপাকসে, সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় দক্ষিণ শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটায় রাজাপাকসে পরিবারের পৈতৃক বাড়িও আক্রান্ত হয়। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ফুটেজে দেখা যায়, লোকজনের উল্লাসের মধ্যেই বাড়িগুলো আগুনে ঢেকে গেছে। প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের কাছাকাছি এলাকায়ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। ভিডিও ফুটেজে সনাথ নিশানথা নামের একজন এমপির বাড়ি থেকে আগুনের লেলিহান শিখা উঠতে দেখা গেছে।