জিনজিয়াংয়ে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ করে থাকতে পারে চীন: জাতিসংঘ

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এতে চীনের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে থাকতে পারে বলে অভিযোগ এনেছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনটি প্রকাশ না করতে জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছিল চীন। বেইজিং এটিকে পশ্চিমা শক্তির দ্বারা সাজানো প্রহসন বলে অ্যাখ্যায়িত করেছে। উইঘুর মুসলিম এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের গুরুতর অভিযোগ অস্বীকার করেছে শি জিনপিং সরকার। যদিও তদন্তকারীরা বলেছেন, তারা নির্যাতনের ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ উন্মোচন করেছেন সম্ভবত, যেটি ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’।

এক বছর ধরে তৈরি করা প্রতিবেদনটি জেনেভায় বুধবার ১১ টা ৪৭ মিনিটে তা প্রকাশ করা হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেটের চার বছর মেয়াদের শেষ সময়ে এসে প্রতিবেদনটি উন্মোচন হলো।

জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। ছবি: রয়টার্স

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের ৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এসেছে, চীন সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী ও উগ্রপন্থাবিরোধী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কারণে জিনজিয়াংয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। ক্যাম্পগুলোতে জোরপূর্বক চিকিৎসা এবং পরিবার পরিকল্পনা ও জন্মনিয়ন্ত্রণ নীতির বৈষম্যমূলকের সম্মুখীন হয়েছেন অনেকে।

জিনজিয়াংয়ে স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত সব বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বন্দিশিবিরে কতজনকে আটকে রাখা হয়েছে তা সঠিকভাবে নিশ্চিত হতে হওয়া যায়নি। তবে মানাবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ধারণা করছে, জিনজিয়াং অঞ্চলে ১০ লাখের বেশি মানুষকে আটকে রেখেছে দেশটির সরকার।

জাতিসংঘের নতুন প্রতিবেদন প্রসঙ্গে প্রায় ৬০টি সংগঠনের প্রতিনিধিত্বকারী ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস স্বাগত জানিয়েছে।

এদিকে তাৎক্ষণকি প্রতিক্রিয়ায় উইঘুর মানবাধিকার প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক ওমর কানাত বলেন, উইঘুর সংকটে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার জন্য একটি গেম-চেঞ্জার। শি জিনপিং সরকারের চরম অস্বীকৃতি সত্ত্বেও জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে যে ভয়াবহ অপরাধ ঘটছে সেখানে।

জিনজিয়াংয়ে প্রায় ১২ লাখ উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন, যাদের অধিকাংশই মুসলাম।