মিয়ানমার সেনাদের বিরুদ্ধে দুটি গ্রামে ১৭ জনকে হত্যার অভিযোগ

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাগাইং অঞ্চলের একাধিক গ্রামে তাণ্ডব চালিয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। তারা দাবি করেছেন, সেনারা দুটি গ্রামে অন্তত ১৭ জনকে হত্যা করেছে, গ্রামের নারীদের ধর্ষণ করেছে। দুই বছর আগে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, জান্তার যুদ্ধাপরাধের সবশেষ নমুনা হলো গ্রামগুলোতে তাণ্ডব। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলের নিয়াউং ইন ও তার তাইং গ্রামে গত সপ্তাহে ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সরকারবিরোধী প্রতিরোধ বাহিনীর সদস্যরা এবং স্ত্রী হারানো এক বাসিন্দা।

তারা বলছেন, নিহতদের সেনাবাহিনীর সদস্যরা আটক করে। কয়েকজনকে হত্যার আগে নির্যাতন করা হয়েছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটিতে রাজনৈতিক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। গণতন্ত্রপন্থীদের কঠোর হাতে দমন করছে সেনাবাহিনী। জাতিসংঘের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ এই সহিংসতাকে গৃহযুদ্ধের কাছাকাছি পরিস্থিতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

সেনাবাহিনী দেশজুড়ে অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযানে গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, হাজারো মানুষকে তাদের বাড়ি থেকে উৎখাত করা হচ্ছে। এসব অভিযান পরিচালনার সময় সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে তারা এই সাগাইং অঞ্চলে।

গণতন্ত্রপন্থী পিপল’স ডিফেন্স ফোর্সেস-এর স্থানীয় নেতা ও মিয়ানমারে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুসারে, ২৩ ফেব্রুয়ারি পাঁচটি হেলিকপ্টার নিয়ে ৯০ জনের বেশি সেনা সদস্য গ্রাম দুটিতে হামলায় অংশ নেয়। নিয়াউং ইন গ্রামের কাছের একটি নদীর ছোট দ্বীপে বৃহস্পতিবার ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিন নারী রয়েছেন। তার তাইং গ্রামে আরও তিজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দুজনের অঙ্গ কেটে ফেলা অস্থায় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে একজনের শিরশ্ছেদ করা হয়েছে।

তার তাইং গ্রামের ৪২ বছর বয়সী মোয়ে কিয়াউ সেনাবাহিনীর হামলা থেকে বেঁচে গেছেন। কিন্তু তার ৩৯ বছর বয়সী স্ত্রী পান থাওয়াল ও ১৮ বছর বয়সী ভাগ্নে নিহত হয়েছে। ফোনে এপিকে তিনি বলেছেন, গত বুধবার সেনারা মধ্যরাতে গ্রামের ৭০ জনকে আটক করে।

মোয়ে কিয়াউ বলেছেন, সেনারা গ্রামের একটি দোকান থেকে বিয়ার ও অন্যান্য সামগ্রী চুরি করেছে।